ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: ধূমপান করা যে স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর তা সকলেই জানেন। কিন্তু তবুও দেশের বেশিরভাগ মানুষ এই নেশার প্রতি মারাত্মক আসক্তি। বেশি প্রবণতা দেখা যায় যুব সমাজের মধ্যে। খানিক কাজের চাপ পড়লেই অফিসের ক্যাবিনেট থেকে বেরিয়ে একটু স্মোকিং জোন খোঁজা। কিংবা সারা দিনের পর রাতের খাওয়া সেরে সুখটান। কখনও আবার কলেজ ক্যান্টিনে চলে দেদার ধোঁয়া ওড়ানো। কেউ আবার দিনে চারটে-পাঁচটা খায়। তো কেউ বা প্যাকেট প্যাকেট উড়িয়ে ফেলেন সিগারেট। তবে পকেটে চাপ থাকলে অন্য একটা উপায়ও আছে আর তা হল বিড়ি।
বিড়ির সুখে কাঁটা!
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিড়ির দোকান রাস্তার অলি গলিতে থাকা ছোট্ট গুপচি দোকানে অহরহ দেখা যায়। পশ্চিমের জেলাগুলিতে এই বিড়িই হয়ে ওঠে তাঁদের পেটের জোগানের মূল তাগিদ। কারণ এই শিল্পকে কেন্দ্র করেই তাঁদের সংসার চলে। কিন্তু তাতেও এবার দেখা দিচ্ছে আশঙ্কার ছায়া। কারণ লোকসভা নির্বাচনের মুখে শাসক বিরোধী সকলের মুখেই উঠে আসছে বিড়ি শিল্পের সঙ্কটের কথা। প্রসঙ্গ উঠছে তবে কি পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকারি সাহায্যের অভাবেই ধুঁকছে এই শিল্প?
শিল্প সংকটে বাঁকুড়া!
সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে বাঁকুড়ার অন্যতম বড় কুটিরশিল্প বিড়ি বাঁধাই শিল্প। আর এই শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল হল কেন্দু পাতা। যাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একাধিক কর্মব্যবস্থা। একসময় বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে এই কেন্দু পাতা সংগ্রহে যুক্ত ছিলেন হাজার হাজার আদিবাসী ও তপশিলি মানুষ। কেন্দু পাতা সংগ্রহ ও বাছাই করে তাঁরা সেই পাতা সহায়ক মূল্যে বিক্রি করত এক সমবায়গুলিতে। তাঁরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দু গাছগুলি কাটিংয়ের কাজ করত এই সমবায়গুলি। নিয়মিত গাছ কাটিং হওয়ায় ভাল মানের পাতাও মিলত। সেই পাতাই সমবায়গুলির মাধ্যমে নির্দিষ্ট দরে পৌঁছে যেত জেলার বিড়ি কারখানাগুলিতে। তার জন্য সরকার সমবায়গুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ প্রদান করত।
আরও পড়ুনঃ মাথায় বাজ ভেঙে পড়ল মানিকের! চরম কপাল খারাপ জেলবন্দী তৃণমূল বিধায়কের
কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে সমবায়গুলিতে পরিচালন সমিতির নির্বাচন না হওয়ায় ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে এই সমবায়গুলি। নিয়মিত গাছ কাটার কাজ বন্ধ থাকায় গাছ থেকে মিলছে না ভাল মানের পাতা। আর এইসব কারণে জঙ্গলমহলে কেন্দু পাতা তুলে হাজার হাজার মানুষের রুজিরুটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলত ভালো মানের কেন্দুপাতা না মেলায় বেশি দাম দিয়ে ভিন রাজ্য থেকে আমদানি করা হচ্ছে পাতা। একদিকে বাড়তি দামে কাঁচামাল কেনা আর অন্যদিকে GST র বাড়বাড়ন্ত অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে জটিল হয়ে পড়ছে। যার দরুন এই শিল্প সংকটকে টার্গেট করে ক্রমেই বিরোধী দল বিজেপি শাসক দল তৃণমূলকে বিঁধেই যাচ্ছে। এবার দেখার পালা কবে মিটবে বিড়ি শিল্পের এই সমস্যা। আবার পুনরায় কবেই বা সবাই তাঁদের রোজগার শুরু করবে।