ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: রাজ্যে এই মুহূর্তে চলছে লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার ভোট পর্বের শেষ প্রস্তুতি। হাতে বাকি আছে মাত্র দুই দিন। তাই শেষ প্রচারে যাতে কোনওরকম ত্রুটি না থাকে, সেই কারণে আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে বিভিন্ন দলের ভোট প্রার্থীরা। জনগণের দ্বারে দ্বারে দেখা দিয়ে আসছেন তাঁরা। শুধু কি ভোট প্রচার? সঙ্গে চলছে দফায় দফায় জনসভা। কিন্তু সম্প্রতি এর মাঝেই হাইকোর্টের এক বিস্ফোরক রায় নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিকে। সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি।
গতকাল অর্থাৎ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা লোকসভা নির্বাচনের মাঝেই রাজ্যে তৃণমূল সরকারের জমানায় জারি সমস্ত OBC শংসাপত্র বাতিল করে দেন। এদিন এই রায় ঘোষণার কারণ হিসেবে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘কোনও নিয়ম না মেনেই ২০১১ সাল থেকে দেদার OBC শংসাপত্র জারি করেছে। এভাবে OBC শংসাপত্র দেওয়া আইন বিরুদ্ধ এবং অসাংবিধানিক। WBCBC অর্থাৎ ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশনের কোনও পরামর্শ না মেনে এই শংসাপত্র জারি করেছে। তাই ওই সমস্ত শংসাপত্র বাতিল করা হচ্ছে। চাকরি বা অন্য কোনও জায়গায় এখন ওই শংসাপত্র আর গ্রাহ্য হবে না।’ এদিকে হাইকোর্টের এই রায়েও বিজেপির কারসাজি দেখছে গোটা তৃণমূল কংগ্রেস।
OBC শংসাপত্র বাতিলের কারণ বিজেপি!
এদিকে OBC শংসাপত্র বাতিলের প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডেলে নয়া তথ্য ফাঁস করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে। তিনি লিখেছেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের OBC শংসাপত্র বাতিলের রায়ের পিছনে একটি মজাদার বিষয় রয়েছে। যে বিচারপতি এই রায় দিয়েছেন তিনিই ফৌজদারি অপরাধ থাকা সত্ত্বেও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দিয়ে ছিলেন। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মামলা করার আগে আদালতের অনুমতি নিতে বলেছিলেন এই বিচারপতি। যা এর আগে কখনও হয়নি। আজকের রায়ও এল লোকসভা নির্বাচনের মাঝখানে। জনগণের রায়ই বলবে যা বলার প্রয়োজন।’
বিজেপিকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর
অন্যদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও গর্জে উঠেছে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, রাজ্যে OBC সংরক্ষণ চলছে, চলবে। এভাবে বাতিল করে দেওয়া যায় না। এটা বিজেপির রায়। এই রায় আমরা মানব না।’ পাশাপাশি তিনি বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ভদ্রলোককে আমি জাজ হিসাবে সম্মান করি। তবে উনি অনেক কিছুতেই বিখ্যাত। বেশ কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী সংরক্ষণ কেড়ে নেবেন বলে সবজায়গায় বলে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু সেটা কখনও হয়? তা হলে তো সংবিধান ভেঙে দিতে হয়। এটা হতে পারে না। এই রায় আমি মানি না। দেশে কখনও ভাগাভাগি হয় না। এটা বাংলার কলঙ্কিত অধ্যায়। হিন্দুকে বাদ দিলাম, মুসলিমকে রাখলাম। এটা হতে পারে? স্পর্ধা তো কম নয়। বিজেপির কোনও পলিসি নিয়ে কথা বলার সাহস আছে?’
আরও পড়ুনঃ হাইকোর্টের এক রায়ে খুলে গেল কপাল! অবশেষে জয় পেলেন সরকারি কর্মীরা
বাদ যাননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিন হাইকোর্টের OBC দের শংসাপত্র বাতিল করার বিরুদ্ধে ঝাড়গ্রামের সভায় মুখ খুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বিজেপির ইস্তাহারেই রয়েছে ভোটের পর ওরা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করবে। এই ভোটে তাদের শিক্ষা দিতে হবে যারা হাইকোর্টের একাংশের মদতে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করতে চাইছে।’