প্রীতি পোদ্দার, খড়দহ: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মুখরিত গোটা রাজ্য সহ দেশ। একের পর এক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পায়ে পা মিলিয়ে চলেছে আট থেকে আশি। সকলের একটাই দাবি ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ কিন্তু এই জাস্টিসের ঝড়ে কিছুতেই টলছে না লালসা। আর মাঝেই একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। হাসপাতালে, মন্ত্রীর বাড়িতে, রাস্তা ঘাটে সমস্ত জায়গায় খবরের শিরোনামে উঠে আসছে শ্লীলতাহানির অভিযোগ। বাদ যায়নি এবার প্রতিবাদের মিছিলও।
ঘটনাটি কী?
সূত্রের খবর, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সোদপুর ট্রাফিক মোড়ে আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডে ন্যায়বিচার চেয়ে প্রতিবাদে নেমেছিলেন খড়দহের উনিশ বছরের এক তরুণী। আর সেই প্রতিবাদ মিছিলে তাঁর সঙ্গে শুভম নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। দুজনে মিলে গলা মিলিয়ে সেই রাতে ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগানও তুলেছিলেন। ধীরে ধীরে সেই পরিচয় ফেসবুকে কথোপকথনের মাধ্যমে আরও গাঢ় হয়। এমনকি দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। কিন্তু সেই ঘনিষ্ঠপূর্ণ বন্ধুত্বই ওই তরুণীর জীবনে ভয়ংকর অন্ধকার নামিয়ে আনে।
গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তদের
জানা গিয়েছে গত শনিবার রাতে শুভম তাঁর বন্ধু অর্ঘ্য দাসকে সঙ্গে নিয়ে তরুণীর খড়দহের বাড়িতে যায়। অভিযোগ ওঠে দুজনের মদ্যপ অবস্থায় ছিল। আর এই অবস্থায় দুজনে তরুণীর ঘরে ঢুকে জোর করে ধর্ষণ করে। এবং সেই সময় দুই বন্ধু এই নৃশংস ঘটনার ভিডিও করে। এবং পরে সেই ভিডিও দেখিয়ে নির্যাতিতাকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ উঠে আসে। তবে ব্ল্যাকমেল এর ভয়কে কাটিয়ে নির্যাতিতা পরের দিন অর্থাৎ রবিবার খড়দহ থানার অভিযোগ দায়ের করেন। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় ওই দুই বন্ধুকে।
গতকাল অর্থাৎ সোমবার দুই অভিযুক্তকে বারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে। সেখানে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে খড়দহের বলরাম সেবা মন্দির হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক কৌশিক রায় জানিয়েছেন, ”সমাজের পরিবর্তন আনার জন্য আমরা সকলেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে চলেছি। প্রতিবাদের জন্য গোলা ছাড়ছি। কিন্তু তবুও এই রকম জঘন্য ঘটনা থামতে চাইছে না। মানুষের বিবেক জাগ্রত হওয়াটা ভীষণভাবে জরুরি।”