এবার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আসছে নয়া পরিবর্তন! কলেজের মতো সেমেস্টার ব্যবস্থায় থাকতে চলেছে ‘সাপ্লি’! সব বিষয়ে ৩০ শতাংশ না পেলে ফেল! অর্থাৎ কোনও পড়ুয়া যদি প্রথম বা তৃতীয় সেমেস্টারে কোনও বিষয়ে পাশমার্ক না পেতে পারেন, তাহলে তাঁকে পরের পরবর্তী দ্বিতীয় বা চতুর্থ সেমেস্টারে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় বসতে হবে বলে জানিয়ে দিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু কেন এই ব্যবস্থা নিল শিক্ষা সংসদ? ছাত্র ছাত্রীদের উপস্থিতির উপর কতটাই বা নির্ভর করছে পরীক্ষার নম্বর? প্রশ্নের ধাঁচ কেমন হবে, উত্তরপত্র কীরকম হবে, পাশমার্ক কত হবে, কীভাবে উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর যোগ করা হবে সবটাই আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নিন বিস্তারিত।
একাদশ শ্রেনীর সেমিস্টার পরীক্ষার প্যাটার্ন
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি অনুসারে জানা গিয়েছে একাদশ ও দ্বাদশে প্রতি সিমেস্টারে প্রতিটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে পড়ুয়াদের। যদি ৩০ শতাংশ নম্বর কেউ না পায় তা হলে সে পরের সিমেস্টারে পরীক্ষার সঙ্গেই ওই বিষয়ে ‘সাপ্লিমেন্টারি’ পরীক্ষা দেবে। একাদশ শ্রেণির সেমিস্টারের ক্ষেত্রে দু’টি সিমেস্টার মিলিয়ে সমস্ত বিষয়ে পাশ করতে হবে পড়ুয়াদের, তা না হলে অকৃতকার্য বলে গণ্য করা হবে। এবং সেই পরীক্ষার্থী আর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারবে না। সবমিলিয়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে মোট চারটি সিমেস্টার দিতে হবে পড়ুয়াদের।
দ্বাদশ শ্রেণীর সেমিস্টার পরীক্ষার প্যাটার্ন
দ্বাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে দুটি সেমিস্টার অর্থাৎ তৃতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টার পড়ছে। সেক্ষেত্রে চতুর্থ সিমেস্টারে কোনও পরীক্ষার্থী কোনও বিষয়ে ফেল করলে পরের বছর আবার দ্বাদশের পরীক্ষার সঙ্গে এই বিষয়গুলির পরীক্ষা দিতে পারবে। অর্থাৎ বছর নষ্ট হলেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর দ্বাদশের চতুর্থ সিমেস্টারের ‘সাপ্লিমেন্টারি’ দেওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীরা চাইলে প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারে পরীক্ষায় না বসেও দ্বিতীয় চতুর্থ সিমেস্টার পরীক্ষায় বসে পাশ করার সুযোগ থাকছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের একই সঙ্গে একই দিনে দু’টি করে পরীক্ষা দিতে হবে সেক্ষেত্রে তাদের অনেকটা চাপ বৃদ্ধি পাবে।
কবে হবে সেমিস্টার পদ্ধতিতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা?
প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের মধ্যে তৃতীয় সেমেস্টারের অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হবে। আর এপ্রিলের মধ্যে চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা হয়ে যাবে। সেই সূচি ধরেই প্রথম এবং দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার দিনক্ষণ নিয়ে নির্দিষ্টভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে সংসদ।
প্রশ্নের ধাঁচ ও উত্তরপত্র
দ্বাদশ শ্রেণীর অর্থাৎ তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষায় মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন (MCQ) থাকবে। আর চতুর্থ সেমেস্টারে শর্ট অ্যানসার টাইপ কোয়েশ্চেন (SAQ) এবং ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন (LAQ) থাকবে বলে সংসদের তরফে জানানো হয়েছে। উত্তর লেখার জন্য ওএমআর এবং ফাঁকা উত্তরপত্রও দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, প্র্যাকটিক্যালের প্রশ্নপত্র এবং প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার জন্য উত্তরপত্রও সংসদ প্রদান করবে।
উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর কীভাবে যোগ হবে?
সংসদ মারফৎ জানা গিয়েছে তৃতীয় এবং চতুর্থ সেমেস্টারের মধ্যে যে সেমেস্টারে যে বিষয়ে বেশি নম্বর পাবে, সেটা ধরা হবে। অর্থাৎ ধরা যাক, কোনও পরীক্ষার্থী তৃতীয় সেমেস্টারে ইকোনমিক্স বিষয়ে পেয়েছেন ৮৯ নম্বর। আর চতুর্থ সেমেস্টারে পেয়েছেন ৭৯। তাহলে উচ্চমাধ্যমিকে তাঁর চূড়ান্ত নম্বর হিসেবে ধরা হবে ৮৯।
পাশাপাশি সংসদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে বছর কোনও পড়ুয়া রেজিস্ট্রেশন করবেন, তাঁর সাত বছরের মধ্যে প্রত্যেক পড়ুয়াকে প্রতিটি সেমেস্টারে অর্থাৎ প্রথম সেমেস্টার, দ্বিতীয় সেমেস্টার, তৃতীয় সেমেস্টার, চতুর্থ সেমেস্টার, প্র্যাকটিক্যাল বা প্রজেক্ট পাশ করতে হবে। নাহলে তাঁর রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাবে।