ইন্ডিয়া হুড ডেস্ক: গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যে রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক খবর বারবার শিরোনামে উঠে আসছে। লোকসভা নির্বাচনের পরে এই দুর্নীতি বিষয়ক মামলা যেন আরও জাঁকিয়ে বসেছে। তাইতো জোর কদমে মাঠে নেমেছে ED এবং CBI। ইতিমধ্যেই রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে জেলের ঘানি টানছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান, শঙ্কর আঢ্য-সহ অনেকেই। আর এবার ED-র নজরে পড়ল টলিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে ED আধিকারিকরা বিশেষ সূত্রে জানতে পেরেছিল যে ঋতুপর্ণার একটি সংস্থায় রেশন দুর্নীতির কয়েক লক্ষ টাকা ঢুকেছে। তাই সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে গত ৫ জুন, রেশন দুর্নীতি কাণ্ড নিয়ে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে তলব করে নোটিস পাঠিয়েছে ED। কিন্তু সেই সময় বিদেশে ছিলেন ঋতুপর্ণা। প্রথমে অভিনেত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে অভিনেত্রী অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে জানান, রেশন দুর্নীতি সম্পর্কে বিন্দু বিসর্গ কিছুই জানেন না তিনি। তাই সেদিন অর্থাৎ ৫ জুন ED-র সামনে হাজিরা দেননি ঋতুপর্ণা। এর পরে গত ১৯ জুন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে সকাল ১১টায় সল্টলেকের CGO কমপ্লেক্সে তলব করা হয়েছিল। সেই হিসেবে হাজিরাও দিয়েছিলেন তিনি।
ED-র তলবে হাজির অভিনেত্রী
সূত্রের খবর, গত বুধবার অর্থাৎ ১৯ জুন, রেশন দুর্নীতি মামলায় দ্বিতীয়বারের তলবে CGO কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সেখানে প্রায় ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বের হন সেখান থেকে। দীর্ঘ জেরা পর্বে চাঞ্চল্যকর বেশ কিছু তথ্য ED র সামনে উঠে এসেছে বলেই খবর। জানা গিয়েছে ঋতুপর্ণা এদিন ED -র কাছে নথি দিয়ে দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে তাঁর সংস্থায় ৬০ লক্ষ টাকা ঢুকেছিল। যার মধ্যে ২০১৫ সালে তিনি ২০ লক্ষ টাকা ফেরতও দিয়েছিলেন। তবে এই টাকা যার মাধ্যমে তাঁর কাছে এসেছিল, সম্প্রতি তাঁর নামও প্রকাশ্যে এনেছেন অভিনেত্রী।
রেশন দুর্নীতির টাকা অভিনেত্রীর কাছে?
বিশেষ সূত্র মাধ্যমে জানা গিয়েছে একটি হিন্দি ছবি তৈরির জন্যই ঋতুপর্ণা সেই টাকা নিয়েছিলেন অভিজিৎ দাস নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে। প্রথমদিকে ঋতুপর্ণা অভিজিৎ দাসকে চিনতেন একজন ব্যবসায়ী হিসেবে। তবে পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, এই অভিজিৎ দাস রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এর ঘনিষ্ঠ। প্রয়োজনে তাঁকেও জেরা করতে পারেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। কিন্তু যে হিন্দির ছবির জন্য বালু ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অভিনেত্রী টাকা নিয়েছিলেন, সেই ছবি সেন্সর বোর্ডে ছাড়পত্র পেলেও, কোনও এক অজানা কারণে এখনও সিনেমাহলে মুক্তি পায়নি।
ইতিমধ্যেই সিনেমার ছাড়পত্র থেকে শুরু করে সমস্ত চুক্তিপত্র, ব্যাঙ্কের যাবতীয় লেনদেনের নথি অভিনেত্রী জমা দিয়েছেন ED র কাছে। এছাড়াও সাংবাদিকদের অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা জানিয়েছেন, ED র আধিকারিকরা যে নথি চেয়েছিলেন তা দিয়েছেন। সবরকম ভাবে সাহায্য করেছেন।