SIR নিয়ে এবার কমিশনকে জোড়া আক্রমণ মমতা, অভিষেকের! মিলল জবাবও

SIR In Bengal

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একাধিক ঝামেলা ঝঞ্ঝাটের মাঝেই গত ৪ নভেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR In Bengal)। কিন্তু SIR শুরু হতেই যেন একাধিক বিতর্ক ঘিরে ধরল। সম্প্রতি বিএলওদের ওপর অত্যাধিক চাপ দেওয়ায় আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ঘটছে রাজ্য জুড়ে। এমনকি কয়েকজন ভোটারও আত্মঘাতী হয়েছে ভোটার তালিকায় নাম না থাকায়। আর তাই সেই কারণে কমিশনের গাফিলতিতে বহু মৃত্যু হচ্ছে বলে কটাক্ষ করে চলেছে তৃণমূল। এমতাবস্থায় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলল শাসকদল। পাল্টা জবাব দিল বিজেপিও।

‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ নিয়ে প্রশ্ন মমতার

কিছুদিন আগে মালবাজারে কাজের চাপে বিএলও-মৃত্যুর ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিত করার দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি কৃষ্ণনগরে BLO মৃত্যু ঘটনাতেও কমিশনকে দুষেছিলেন মমতা। এমতাবস্থায় এসআইআর-এর জন্য রাজ্যে এক হাজার ‘ডেটা এন্ট্রি অপরাটের’ ও ৫০ জন সফটওয়ার ডেভেলপার’ নিয়োগ নিয়ে কমিশন ও রাজ্য সরকারের টানাপড়েনে ফের জ্ঞানেশকেই চিঠি লিখলেন মমতা। আসলে কমিশন রাজ্যে SIR কর্মসূচির ক্ষেত্রে আগামী এক বছর স্থায়ী কর্মীদের প্রয়োজন। কিন্তু অভিযোগ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর নাকি জেলাশাসকদের চুক্তিভিত্তিক ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ বা ‘বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে’র থেকে কাউকে নিয়োগ করতে বারণ করেছিল। আর তাতেই প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। রাজনৈতিক দলের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই কাজ কিনা তাই নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

স্পষ্ট জবাব রাজ্যের সিইও-র

ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বেসরকারি আবাসনে বুথ তৈরির নির্দেশ নিয়েও সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘এটা সমস্যাজনক। বুথ সব সময়েই সরকারি বা আধা-সরকারি জায়গায় হয়ে থাকে। তাই এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতায় গুরুতর প্রভাব ফেলবে।’ তাই এবার এই প্রসঙ্গ নিয়ে সরাসরি জবাব দিল রাজ্যের সিইও মনোজ আগরওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এসআইআরের অনেক আগে। কমিশনই টেন্ডার করতে বলেছিল। অর্থ দফতরকে সেই প্রক্রিয়াটি পাঠানো হয়েছিল।’’ এরপরই আবাসনে বুথ তৈরি নিয়েও তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ব্যাপারে সিইও এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।’’

আরও পড়ুন: SIR-এ বাংলায় বাদ পড়ছে ১০ লক্ষ নাম! এগিয়ে কোন জেলা? বড় আপডেট কমিশনের

কমিশনকে হুঁশিয়ারি অভিষেকের

কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠতেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পাল্টা অভিযোগ করেন যে, ‘‘রাজীব সিনহার মতো এক জন দুর্নীতিগ্রস্তকে দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন পরিচালনা করে মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চায়েত-পুরসভা ভোটে লুট করেছিলেন। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে এই কাজ করা যাবে না।’’ এদিকে কমিশনের বিরুদ্ধে অভিষেকের পাল্টা হুঁশিয়ারি। তিনি বলেন, ‘কমিশন বিজেপির সহকারী হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু বোঝাতে হবে, এটা বিহার নয়’! এছাড়াও তিনি আরও বলেন যে, ‘বিহার, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও দিল্লির সঙ্গে বাংলার অনেক ফারাক আছে। লোকসভা ভোটের তুলনায় সব বুথে অন্তত একটি ভোট বাড়াবই’।

Leave a Comment