প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর আতঙ্কে গত কয়েক দিনে পশ্চিমবঙ্গে যেন হুলুস্থুল কান্ড শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারী শয়ে শয়ে বাংলাদেশি। তাইতো পাততাড়ি গুটিয়ে নিজের দেশে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তাঁরা। এবার সেই একই ছবি দেখা গেল মধ্যমগ্রামের (Madhyamgram) বুকে। রাতারাতি এলাকা ছাড়া হল প্রায় ১০০টির বেশি পরিবার।
মধ্যমগ্রামের মাঠপাড়ার SIR আতঙ্ক
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্য জুড়ে SIR বিতর্ক এইমুহূর্তে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। যার জেরে অনেক এলাকা জনশূন্য হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল মধ্যমগ্রাম পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড। কিছুদিন আগে পর্যন্ত মধ্যমগ্রামের মাঠপাড়ার এই গ্রামে বাস ছিল ১০০-র বেশি পরিবারের কিন্তু আজ গোটা গ্রামটাই এখন শূন্য। রাতারাতি উধাও সবকটি পরিবার। জানা গিয়েছে, এই এলাকার মানুষজন বেশিরভাগই অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যেমন কেউ কাগজ কুড়োতেন, কেউ জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ করতেন। এমনকি এই এলাকার বাসিন্দারা রীতিমতো ভারতীয় নাগরিকদের যা যা সুবিধা পাওয়ার কথা সবটাই নিতেন। কিন্তু ২০০২ এর তালিকায় এদের কারও নাম না থাকায় তড়িঘড়ি এলাকা ছেড়েছেন সকলে। কোথায় চলে গিয়েছেন, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছে না।
বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার লাইন অনুপ্রবেশকারীদের
দিনের পর দিন বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসে থাকছিলেন অসংখ্য অনুপ্রবেশকারী। কেউ বছর ১৫ তো কেউ আবার বছর ৫ ভারতে ভুয়ো ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ড বানিয়ে রাজ্যের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছিলেন, এরপর SIR শুরু হতেই টনক নড়ল সকলের। এখন তাই সকলে বাংলাদেশে পালাচ্ছেন অনুপ্রবেশকারীরা! যদিও এই ছবি শুধু মধ্যমগ্রামের নয়, বেশ কিছু দিন ধরেই কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় এবং একাধিক জেলায় এই ছবি দেখে আসছে বঙ্গবাসী। SIR নিয়ে সঠিক তথ্য অনেকের কাছে না পৌঁছানোয় বাক্সপ্যাঁটরা গুছিয়ে ফেলেছেন সকলে! আসলে ভয় একটাই, যদি ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়! তাইতো আগে ভাগেই উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার লাইনটা ক্রমেই লম্বা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুতিনের বিরুদ্ধে জারি গ্রেফতারি পরোয়ানা, ভারতে আসবেন কীভাবে?
উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে বাংলাদেশে ফিরে যেতে চেয়ে মানুষের ব্যাপক ভিড় বেড়েছে। ভিড়ের লাইনে অনেকেই স্বীকার করেছেন যে তারা ভুয়োপথে ভারতবর্ষে বসবাস করেছেন। যদিও নির্দিষ্ট তল্লাশি ও খোঁজখবর নিয়ে, কাগজপত্র দেখে তাঁদের ওপার-বাংলায় পাঠানো হচ্ছে। যার ফলে তাই প্রশ্ন উঠছে তবে কি মধ্যমগ্রামের এই গ্রামের বাসিন্দারাও বাংলাদেশমুখী?