সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দীর্ঘ ৯ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা (WB SSC Exam)। আজ নবম-দশম শ্রেণীর পরীক্ষা ছিল, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে বাইরের রাজ্য যেমন উত্তর প্রদেশ, বিহার থেকেও প্রচুর চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিতে এসেছে। তবে তারই মধ্যে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
জানা গিয়েছে, এসএসসি পরীক্ষার উত্তেজনার মাঝে বিপত্তিতে পড়েছে উত্তরপ্রদেশের এক পরীক্ষার্থী। হুগলি স্টেশনে পকেটমারের শিকার হয়েছে ওই চাকরিপ্রার্থী। এমনকি টাকা পয়সা, ফোন সবকিছুই হারিয়েছেন তিনি। মাথা ঘুরে অসুস্থতা নিয়ে শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দিতে এসেছেন ওই পরীক্ষার্থী।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
জানা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলার গোপীগঞ্জের সন্ত রবিদাস নগরের বাসিন্দা আনন্দকুমার বিন্দ নবম-দশম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন। শনিবার বিভূতি এক্সপ্রেসে হাওড়া এসে সেখান থেকে লোকাল ট্রেনে করে হুগলি স্টেশনে নেমেছিলেন। আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি।
তিনি জানিয়েছেন, স্টেশনে এক অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর আলাপচরিতা হয়। সেই ব্যক্তি তাঁকে হোটেলে নিয়ে গিয়ে খাবারও খাওয়ান। এরপর দুজনে মিলে গঙ্গায় স্নান করতে গিয়েছিলেন। পরিকল্পনা ছিল, রাতে স্টেশনে থেকে যাবেন। তবে তারপর হঠাৎ করেই তাঁর আর কিছু মনে নেই। আনন্দের যখন জ্ঞান ফেরে, তখন দেখে যে তিনি চুঁচুড়া হাসপাতালে শুয়ে রয়েছেন।
আনন্দ অভিযোগ করছে, ওই ব্যক্তি থেকে দাদার মতো আচরণ করে প্রথমে বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। পরে তাঁর মোবাইল থেকে শুরু করে টাকা-পয়সা সবকিছু হাতিয়ে নেন। তিনি বলেছেন, দাদার মতো বলেছিলেন, কিন্তু দাদার মতো এভাবে সর্বনাশ করে দেবে, আমি কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি।
উল্লেখ্য, আজ অর্থাৎ রবিবার ছিল নবম-দশম শ্রেণীর এসএসসি নিয়োগ পরীক্ষা। মাথা ঘোরানো শরীর নিয়েই চুঁচুড়া হাসপাতাল থেকে সরাসরি হুগলি ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্র পৌঁছে যান আনন্দ। ইতিহাস বিষয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন তিনি। তবে শরীর খারাপ থাকার কারণে অনেকটা সময় পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে বসে থাকতে হয়েছিল তাঁকে।
আরও পড়ুনঃ মাথার দাম ছিল ১০ লাখ, ঝাড়খণ্ডের নিকেশ কুখ্যাত মাওবাদী নেতা অমিত হাঁসদা
পরীক্ষায় কড়া নিরাপত্তা
অন্যদিকে রাজ্য জুড়ে এবার এসএসসি পরীক্ষায় কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে। আর হুগলীতেও ঠিক ছিল তেমনই নজরদারি। মোট ৩৩ টি কেন্দ্রে প্রায় ১৪,২৭২ জন পরীক্ষার্থী এবার পরীক্ষা দিয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে মোতায়ন ছিল পুলিশ বাহিনী, পাশাপাশি সার্কিট ক্যামেরায় নজরদারি রাখা হচ্ছিল।