প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী আগামী ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর, SSC-র নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (SSC Exam) অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। তাই শেষ মুহূর্তে চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি। এদিকে নতুন পরীক্ষায় অযোগ্যরা যাতে বসার সুযোগ পায় সেই নিয়ে মামলা করেছিলেন চাকরিহারা অযোগ্যদের একাংশ। কিন্তু বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য অযোগ্যদের আর্জি খারিজ করে দেন। এবার সেই একই পথে হাঁটল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলা ওঠে ডিভিশন বেঞ্চে
SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিগত কয়েক মাস ধরেই উথাল পাথাল রাজ্য রাজনীতি। ২০১৬-র শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে দাগি চাকরি প্রার্থীদের পরীক্ষায় না বসার নির্দেশ প্রথম থেকেই দিয়ে এসেছে সুপ্রিম কোর্ট। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল যে, যাঁদের নাম কালো তালিকায় রয়েছে, তাঁরা আর নতুন করে পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। কিন্তু তবুও খানিক আশা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের একক বেঞ্চে পরীক্ষায় বসা নিয়ে মামলা করা হয়, কিন্তু সেখানেও একক বেঞ্চের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য মামলা খারিজ করে। এরপর পাল্টা সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে করা হয় সেই মামলা। কিন্তু তাতেও খুব একটা ভালো ফল পাওয়া গেল না।
SSC-র কর্মকাণ্ডে বিরক্ত ডিভিশন বেঞ্চ
টিভি ৯ বাংলার রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে অযোগ্যদের মামলা ওঠে। সেই সময় মামলাকারীদের আইনজীবীরা অর্থাৎ অনিন্দ্য লাহিড়ী, সুবির স্যানাল সৌম্য মজুমদাররা আগের একাধিক রায়ের পর্যবেক্ষণে দেখিয়ে তাঁদের পক্ষে আদালতের অবস্থান বোঝানোর চেষ্টা করেন। আর তাতেই বিরক্ত হন বিচারপতিরা। তখনই মামলাকারীদের উদ্দেশে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, “আপনাদের অফিসাররা কেন কাঠগড়ায় উঠবেন না? কেন আপনাদের অফিসারদের চাকরি যাবে না? যেখানে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে দাগিদের কোনও ভাবেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া যাবে না, সেখানে কী করে SSC তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড দিল?”
অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে কল্যাণকে প্রশ্ন বিচারপতির
অ্যাডমিট কার্ড প্রসঙ্গে সেই সময় আদালতে SSC-র আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এত লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে কে অযোগ্য আর কে নয় এটা বাছাই করা যায়নি। তাই দিতে হয়েছে। ওটা ভুল হয়েছে।” পাল্টা উত্তরে বিচারপতি ক্ষুব্ধ স্বরে বলেন, “আপনাদের অফিসাররা এত গুরুতর ভুল কী করে করেন? তারপরেও তাঁদের চাকরি কী করে যায় না?” তখনই SSC-র দাগীদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি চান কল্যাণবাবু। তাঁর এই আবেদনে তখন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘এই মামলায় তাহলে আমরা রেকর্ড করছি, এসএসসির কনসেন্ট নিয়ে আমরা পরীক্ষায় বসতে দিচ্ছি?” আর তাতেই সেই আবেদন থেকে পিছনে সরে আসেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: কুণালের বিরুদ্ধে ১০০ কোটির মানহানির মামলা মিঠুনের! কী কারণে? শুনানিই বা কবে!
প্রসঙ্গত, গতকাল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, “যেখানে সুপ্রিম কোর্ট গোটা ব্যাপারটায় নজরদারি করছে, দাগিদের বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে, সেখানে এই ভাবে আবেদন করলেও অন্য কিছু ভাবতে বা বলতে পারা যায় না। তাই দাগিদের কোনো সুযোগ নেই।” এরপর ডিভিশন বেঞ্চ ৩৫০ আবেদন খারিজ করে। এবং একক বেঞ্চের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের রায়কেই বহাল রাখে।