আপনি পাবেন না একসঙ্গে তিন মাসের রেশন! নয়া সিদ্ধান্ত সরকারের

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বর্ষায় চারিদিকে জলমগ্ন অবস্থা। গ্রামে গ্রামে আর রেশনের গাড়ি ঢুকছে না। আর ঠিক সে সময় কেন্দ্র সরকার বড়সড় সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল। হ্যাঁ, আগামী তিন মাসের রেশন আগে থেকেই ডিলারদের হাতে তুলে দিতে হবে। লক্ষ্য একটাই প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় রেশন বিতরণ ব্যবস্থাকে আরো দ্রুত ও সহজ করা। 

তবে যতটা সহজ ভাবে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, বাস্তবে ঠিক ততটা সহজ ভাবে হচ্ছে না। কারণ, পর্যাপ্ত স্টোরেজ নেই! এমনকি রেশন দোকানিরা অতিরিক্ত মজুদ শস্য কোথায় রাখবেন, তা ভেবেই কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেনা।

ডিলারদের আপত্তি

কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে দেশ জুড়ে ফেয়ার প্রাইস সপ ডিলাররা প্রতিবাদ শুরু করেছে। হ্যাঁ, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু এবার সরাসরি কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীকে চিঠিও পাঠিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, 138 লক্ষ মেট্রিক টনের মতো বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য তারা তিন মাসের জন্য কোথায় রাখবেন?

বলে রাখি, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই বরাদ্দ করা হয়েছিল 9.99 লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য। তবে অবশেষে পিছু হটল কেন্দ্র। কারণ গত 30 জুন নতুন করে সমস্ত রাজ্যকে জানানো হয় যে, আগস্ট মাসের খাদ্যশস্য 31 জুলাইয়ের মধ্যে নিলেও চলবে। অর্থাৎ, একসঙ্গে তিন মাস নয়, বরং পুরনো রুটিনেই ফিরছে কেন্দ্রীয় সরকার।

কেন তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র?

প্রসঙ্গত, 6 মে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। আর সেখানে জানানো হয়েছিল জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসের রেশন আগেভাগে তুলে রাখতে হবে প্রতিটি রাজ্যকে। বর্ষাকালে খাদ্যশস্য পরিবহনে যাতে কোনোরকম সমস্যা না হয়, সেই কথা ভেবেই এই আগাম মজুদের চিন্তাভাবনা নেওয়া হচ্ছিল।

আরও পড়ুনঃ মুর্শিদাবাদের স্কুলে বাইক বাহিনীর দাপট! ভাইরাল ভিডিও দেখে নিন্দার ঝড় বাংলাজুড়ে

তবে বাস্তব পরিস্থিতি অন্য কথা বলছে। অনেক রাজ্যের এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে গুদাম ঘর বা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। আর রেশন দোকানদাররা তো আরো বিপাকে পড়ছে। কারণ তারা দোকানের পাশে ছোট গুদামে চাল-গম রাখে। এখানে কোনোভাবেই তিন মাসের খাদ্যশস্য রাখার উপায় নেই।

এদিকে সম্প্রতি সংসদের গণবন্টন সংক্রান্ত কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সভাপতি ছিলেন ডিএমকের সাংসদ কানিমোঝি। খাদ্যমন্ত্রকের সচিব সঞ্জীব চোপরা জানান যে, রেশন গ্রাহকরা যদি দোকানে সঠিক পরিমাণের রেশন না পায়, তাহলে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তারা অভিযোগ জানাতে পারবে।

তবে এতে বাড়ে বিপত্তি। কারণ তৃণমূলের রাজ্যসভার সংসদ প্রকাশ চিক বরাইক প্রশ্ন তোলেন যে, সমস্ত গরীব মানুষের কাছে গিয়ে স্মার্টফোন রয়েছে? তারা অ্যাপ কীভাবে নামাবে? আধুনিকীকরণ মানে কি প্রযুক্তি নির্ভর সমাধান? নাকি সবদিক ভেবে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? তবে খাদ্য সচিব এই ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে জবাব দিতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।

Leave a Comment