প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: শেখ হাসিনার কপালে জুটল আরও দুর্ভোগ! দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার-সহ একাধিক অভিযোগ উঠছে এবার হাসিনা কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে। এই আবহে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওরফে WHO। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ছিলেন তিনি। যদিও কেন হাসিনা-কন্যাকে ছুটিতে পাঠানো হল, আনুষ্ঠানিক ভাবে তা জানায়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে হাসিনা কন্যা পুতুল
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস একটি ছোট্ট ইমেলের মাধ্যমে কর্মীদের খবরটি জানিয়েছেন। আর সেই ইমেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার অর্থাৎ ১১ জুলাই থেকে সায়মা ওয়াজেদ ছুটিতে থাকবেন। আপাতত সেই জায়গায় তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী প্রধান ক্যাথরিনা বোহেম।
তিনি আগামী ১৫ জুলাই নয়াদিল্লিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। কিন্তু কেন হাসিনা কন্যাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই নিয়ে কোনো স্পষ্ট মন্তব্য করা হয়নি।
পুতুলের বিরুদ্ধে উঠে এল একাধিক অভিযোগ
গত বছর থেকেই অভিযোগ উঠে আসছে যে মা শেখ হাসিনা নাকি প্রভাব খাটিয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ২০২৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্ব পদ গ্রহণ করিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই পুতুলের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির প্রশ্ন উঠছিল একাধিক।
আর এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন চলতি বছরের জানুয়ারিতে তদন্ত শুরু করে। এমনকি এও অভিযোগ উঠেছিল যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান হওয়ার জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন তা নিয়েও নাকি মিথ্যে তথ্য দিয়েছিলেন পুতুল।
আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে হাসিনা কন্যা
এছাড়াও অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গিয়েছিল যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে সাম্মানিক পদ পাওয়ার বিষয়ে সায়মার দাবি খারিজ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আর্থিক দুর্নীতি নিয়েও উঠে এসেছিল একাধিক অভিযোগ। জানা যায় অন্য একটি সংস্থার প্রধান হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নাকি ২.৮ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহও করেছিলেন।
তাই এসবের জন্য হাসিনার কন্যার বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ঝড় জল বন্যার মাঝেই উচ্চ মাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা! চিন্তায় পড়ুয়া থেকে পর্ষদ
WHO-এর সিদ্ধান্তে বেশ খুশি ইউনূস সরকার
যদিও সায়মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলার কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই পদক্ষেপ করল কি না, তা এখনও অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
এই বিষয়ে ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, স্বচ্ছতার স্বার্থে ‘WHO’-এর গরিমার কথা মাথায় রেখে সায়মাকে পদচ্যুত করা উচিত এবং তাঁর সমস্ত সুযোগসুবিধা কেড়ে নেওয়া উচিত।