সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভোরের আলো ঠিকঠাক ফোটার আগেই পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দেখা যায় এক পরিচিত নারীকে! হ্যাঁ, হাতে এক বড় ব্যাগ, আর সেই ব্যাগ ভর্তি খাবার! মানুষটির নাম কাজুলি বিশ্বাস (Kajuli Biswas)। তবে তার পরিচয় শুধু এটি নয়, বরং এই নারী এখন অনেকের কাছে আশার আলো! বিশেষ করে যাদের কেউ খোঁজ খবর রাখে না, তাদের জন্য মানবতার ফেরিওয়ালা কাজুলি বিশ্বাস।
নিজে রান্না করে এনেই খাওয়াচ্ছেন অসহায়দের
কাজুলি দেবী প্রতিদিন নিজের হাতেই রান্না করেন। কখনো ভাত-ডাল, আবার কখনো সোয়াবিনের তরকারি, আবার কোনও কোনও দিন আমিষ খাবারও থাকে। তবে খাবার বিলি করছেন ঠিকই, কিন্তু তার থেকে বেশি বিলিয়ে দিচ্ছেন নিজের ভালোবাসা আর স্নেহ!
হ্যাঁ, মানবতার জলজ্যান্তের উদাহরণ তিনি। নিজের রান্না করা খাবার নিয়ে আসেন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকা ভবঘুরে এবং নিরাশ্রয়ী মানুষদের জন্য। এমনকি কোনও সরকারি সাহায্য বা এনজিও সংস্থার দানও নেন না তিনি, সবই নিজের সামর্থের মধ্যে। শুধু মানবিকতার টানেই তিনি আজ এখানে।
বাচ্চা থেকে বুড়ো, সবার মুখে তুলে দিচ্ছেন অন্ন
দেখুন, স্টেশনে অনেকেই থাকে, যাদের কোনও পরিবার নেই, কেউ কোনও খোঁজ খবর রাখে না। কেউ বৃদ্ধ, আবার কেউ শারীরিকভাবে অক্ষম, আবার অনেক অসহায় শিশুদেরও দেখা যায়। আর তাদের সবার মুখেই খাবার তুলে দিচ্ছেন কাজুলি দেবী। অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, কোনও বৃদ্ধ দাঁড়াতে পারছে না, কাজুলি নিজে হাতে তাকে খাইয়ে দিচ্ছেন। আবার শিশুদেরকে ভালোবাসার মাধ্যমে কোলে টেনে খাওয়াচ্ছেন।
তবে কাজুলি দেবী নিজেও একটি ফেসবুক পেজ চালান। আর সেখানে তিনি প্রতিদিন তার এই সমাজসেবার চিত্র আমাদের মধ্যে তুলে ধরেন। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে এরকম মানবিকতার দৃষ্টান্ত! তিনি নিজেই জানিয়েছেন, আমি জানি এদের কীভাবে অনাহারে দিন কাটছে। তাই নিজের সাধ্য মতো যতোটুকু পারছি, ততটুকু চেষ্টা করছি। যাতে না খেয়ে কেউ কষ্ট না পায়, তার জন্যই আমার এই পদক্ষেপ।
আরও পড়ুনঃ লাগে না লাইসেন্স, RTO রেজিস্ট্রেশন! মাত্র ৫০ হাজার টাকায় বাজারে এল সেরা ইলেকট্রিক স্কুটার
এক কথায়, বর্তমান দিনে দাঁড়িয়ে যেখানে নিজের পরিবারের দিকেই নজর দেওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ছে, সেখানে কাজুলি বিশ্বাসের মতো এরকম কঠোর পরিশ্রমী এক নারী, যিনি নিজে রান্না করে নিজের সামর্থ্যে ব্যাগ ভরে স্টেশনের অসহায় মানুষদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছেন, তা সচরাচর দেখা যায় না। এমনকি কোনও বিজ্ঞাপন, ফান্ডিং বা কোনও সরকারি সংস্থার সাহায্যে ছাড়াই। এক কথায় তিনি প্রমাণ করেছেন যে, বড় কাজ করার জন্য কোনোদিন টাকা পয়সার প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় শুধু মানবিকতা এবং দায়বদ্ধতার।
I like it. I want your mobile number and e-mail I’d. I may support in financial aspect.