টাকা নিয়ে মৃত্যু, জন্মর সার্টিফিকেট দিচ্ছে পঞ্চায়েত! অভিযোগ ঘিরে তুলকালাম বাদুড়িয়া

Baduria

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে মিলছে জন্ম, মৃত্যুর শংসাপত্র! এই অভিযোগ ঘিরেই ব্যাপক হইচই শুরু হয়ে গেল উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার (Baduria) চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বিগত কয়েক মাস ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জাল জন্ম এবং মৃত্যুর শংসাপত্র পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। এই চক্রের মূল পান্ডা কে তা ধরতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন, এমতাবস্থায় পঞ্চায়েত দফতর থেকে টাকার বিনিময়ে এইরূপ বেআইনি কাজের হদিশ মেলায় গোটা এলাকা জুড়ে বিক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হল।

ঘটনাটি কী?

রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ার চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত টাকার বিনিময়ে জন্ম ও মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল বাড়াতে এইভাবে সাধারণ মানুষের পকেটের উপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে। জানা গিয়েছে, পাঁচ-দশ টাকা নয়, নেওয়া হচ্ছে কমপক্ষে ৫০০ টাকা করে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার অধিক টাকাও নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী। চন্ডিপুর পঞ্চায়েতের উমাপতিপুরের এক বাসিন্দা হাবিল মন্ডল তার ছেলের জন্ম সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেন পঞ্চায়েতে। সেখানে তাকে ৫০০ টাকা দেওয়ার কথা জানালে তিনি সেই টাকা দিলে রশিদ দেওয়া হয় পঞ্চায়েত থেকে। যেখানে লেখা সার্টিফিকেটের জন্য ডোনেশন স্বরূপ ৫০০ টাকা দেওয়া হল। আর তাতেই মিলছে সার্টিফিকেট।

তদন্তের আশ্বাস পঞ্চায়েত সভাপতির

বাদুড়িয়ার চন্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শুধু হাবিল মন্ডল নয় এর আগে একাধিক ব্যক্তির তরফ থেকে জন্ম এবং মৃত্যুর সার্টিফিকেটের জন্য নেওয়া হয়েছিল টাকা। এই বিষয়ে গ্রামের একাংশ বিক্ষোভ দেখায়। এমনকি টাকার বিনিময়ে এইভাবে বেআইনিভাবে সার্টিফিকেট দেওয়া নিয়ে পঞ্চায়েতের প্রধানের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি কিছু বলবেন না বলে জানিয়ে দেন। এমনকি স্থানীয় ব্লক অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও মেলেনি উত্তর। কোনও উপায় না পেয়ে শেষে অভিযোগ জানানো হয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে। তিনি আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন সম্পূর্ণ ঘটনাটি তদন্ত করা হবে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে প্রশাসনের তরফ থেকে।

আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসাথী, রেশন কার্ডকেও পরিচয়পত্র হিসেবে ধরার আর্জি মুখ্যসচিবের! না করে দিল CEO

প্রসঙ্গত, জন্ম মৃত্যুর সার্টিফিকেট নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে জানানো হয়েছিল, যেসব পরিবার নবজাতকের জন্ম শংসাপত্রের জন্য আবেদন করবেন, তাদের ক্ষেত্রস্তরে যাচাই করবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার আশা (ASHA) কর্মীরা। তারা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্তানের পরিচয় ও বসবাস সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবেন এবং একটি প্রতিবেদন তৈরি করে তা পাঠাবেন BMOH-এর কাছে। সেই রিপোর্ট যাচাই করে তবেই অনুমোদন দেবেন ব্লক মেডিক্যাল অফিসার। পাশাপাশি গোটা প্রক্রিয়া এখন রাজ্য সরকারের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন পোর্টালের মাধ্যমে করা যাবে।

Leave a Comment