সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতীয় রেলের (Indian Railways) উপর ভর করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছয়। আর এই বিরাট ব্যবস্থাকে সচ্ছল রাখতে প্রতিদিন নজরদারি চালায় রেলের আধিকারিকরা। তেমনই টিকিট পরীক্ষার সময় উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি রেলওয়ে ডিভিশনে ঘটল এক অবাক করা ঘটনা, যা নিয়ে তোলপাড় রেল।
কী ঘটেছিল ওইদিন?
News 18-এর রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ওইদিন সকাল সকাল ঝাঁসি ডিভিশনের বিভিন্ন ট্রেনে টিকিট চেকিং চলছিল। দায়িত্বে ছিলেন ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনেশনারের একটি টিম। এক-একটি কামরায় গিয়ে তারা যাত্রীদের টিকিট যাচাই করছিল। তবে এক কামরায় ঢুকে তারা দেখতে পান যে, একজন মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি আরাম করেই বসে রয়েছেন। যথারীতি থেকে টিকিট দেখাতে বলা হয়। তবে এরপর ওই ব্যক্তি টিকিটের বদলে একটি কাগজ ধরিয়ে দেন। আসলে সেটি ছিল একটি চিঠি।
প্রথমে অবাক হলেও টিটিই যখন ওই চিঠিটি পড়া শুরু করেন, তখন পরিস্থিতি পুরো বদলে যায়। তিনি এক মুহূর্ত চুপ করে থেকে ওই ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার পায়ে পর্যন্ত হাত দেন। আসলে ওই চিঠির বিষয়বস্তু ছিল তাঁর সমাজ সেবামূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে। সামাজিক কাজে অবদান রাখার জন্য ওই চিঠিতে স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে সম্মাননাও জানানো হয়েছিল তাঁকে। টিটিই নিজেও বলেছেন, আপনার কাজ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার পাশে থাকতে চাই। আর এরকম সমাজসেবায় আমরা সবাই আপনার পাশে থাকব।
তবে সঙ্গে সঙ্গে টিটিই স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সমাজসেবা আপনি করতেই পারেন। তবে এই ট্রেনে সফর করতে গেলে অবশ্যই টিকিট কাটতে হবে। আইন সবার জন্যই সমান। তবে ওই যাত্রী রীতিমতো প্রতিবাদ করেন। এমনকি চিৎকার করেন বলেন, আমি এত কিছু সমাজের জন্য করছি, তাহলে কি আমাকে এইটুকু ছাড় দেওয়া উচিত নয়? তবে টিটিই তার বক্তব্যেই অনড় থাকে।
আরও পড়ুনঃ ইংলিশ ভূমিতে সিরাজ, কৃষ্ণার দাদাগিরি! পঞ্চম টেস্টে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিল ভারত
উল্লেখ্য, ওই বিশেষ টিকিট চেকিং অভিযানটি পরিচালনা করছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ম্যানেজার পঙ্কজ ত্রিপাঠী। এমনকি তার সঙ্গে ছিলেন চিপ টিকিট ইন্সপেক্টর মনোহর লাল মীনা, শ্রীলাল, মুকেশ কুশওয়াহা, জিতেন্দ্র কুমার বর্মা, মহেন্দ্র সিং প্যাটেল, মোহাম্মদ মুদাসসার খান, ইমতিয়াজ রহমান এবং নরেশ শর্মা।