সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্ব অর্থনীতিতে দিনের পর দিন অনিশ্চয়তা বাড়ছে। কিন্তু এবার এক বিরাট পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলল। দীর্ঘদিন ধরে যে মার্কিন ডলার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং রিজার্ভ ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, সেই ডলারের উপর নির্ভরতা কমিয়ে সোনাকেই কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করছে ব্রিকস জোট (BRICS Gold Buy)। হ্যাঁ, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা এই পাঁচ দেশ মিলিয়ে নতুনভাবে এবার নিজেদের আর্থিক শক্তির ভিত গড়ে তুলছে। তাহলে ভবিষ্যতের জন্য কী অপেক্ষা করছে?
বিশ্বাস সোনার ভান্ডারে ব্রিকসের দাপট
সরকারের দেওয়া একটি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বের মোট সোনার মজুদের ২০ শতাংশ সরাসরি ব্রিকস দেশগুলির হাতেই রয়েছে। কিন্তু কৌশলগতভাবে ঘনিষ্ঠ দেশগুলিকে ধরলে এই পরিমাণ আরও অনেকটাই বেড়ে যাবে। এমনকি বিশেষজ্ঞদেড় হিসাব বলছে, ব্রিকস জোট এবং তাদের বন্ধু দেশগুলি মিলিয়ে এখন বিশ্বের প্রায় ৫০ শতাংশ সোনা উৎপাদনের উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রকল্প শেষ হলে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে! পোস্ট অফিস নিয়ে নতুন অভিযোগ
এদিকে সোনা উদ্ধারের ক্ষেত্রে ব্রিক্সের ভিতরেও এগিয়ে রয়েছে চিন এবং রাশিয়া। কারণ, ২০২৪ সালে চিনে ৩৮০ টন সোনা উৎপাদিত হয়েছে। আর রাশিয়ায় উৎপাদিত হয়েছে ৩৪০ টন। শুধুমাত্র উৎপাদন নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাজার থেকেও সক্রিয়ভাবে সোনা কিনেছে এই দেশগুলি। আর এই প্রবণতার সবথেকে বড় উদাহরণ হল ব্রাজিল। কারণ, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রাজিল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ১৬ টন সোনা কিনেছে। হ্যাঁ, ২০২১ সালের পর এটি ছিল তাদের প্রথম সবথেকে বড় সোনা ক্রয়।
আরও পড়ুন: আজিমগঞ্জ থেকে দীঘা অবধি চলুক বন্দে ভারত, রেলের কাছে গেল প্রস্তাব
বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, ব্রিকস দেশগুলি এখন দ্বিমুখী কৌশল অনুসরণ করছে। একদিকে নিজেদের দেশে সোনা উৎপাদন বাড়াচ্ছে, আবার অন্যদিকে সোনা বিক্রি কমাচ্ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার থেকেও নিয়মিত সোনা কিনছে। আর এই কৌশলের ফলে ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির ৫০ শতাংশ বেশি ব্রিকস দেশগুলি কিনেছে। এদিকে বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্যের ৩০% আসে ব্রিকস অর্থনীতি থেকেই। যার ফলে আর্থিক সিদ্ধান্তের প্রভাবও ক্রমশ বাড়ছে। এখন দেখার, ভবিষ্যতে সোনার ভান্ডার আরও শক্তিশালী হয় কিনা।