সহেলি মিত্র, কলকাতা: নভেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগে বিরাট চমক দিল EPFO। জানা গিয়েছে, ভারতের শ্রম কাঠামোর এক বিরাট পরিবর্তনের মাধ্যমে, সরকার শুক্রবার চারটি শ্রম কোড (Labour Law) বাস্তবায়ন করেছে, যা ২৯টি বিদ্যমান আইন প্রতিস্থাপন করেছে। কর্মকর্তারা এটিকে স্বাধীনতার পর থেকে এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সংস্কার হিসাবে বর্ণনা করেছেন। মজুরি, শিল্প সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তা এবং পেশাগত সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এই কোডগুলি আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছে EPFO।
নতুন শ্রম কোড লাগু করল EPFO
এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে বড় তথ্য শেয়ার করে নিয়েছে EPFO। সেইসঙ্গে শ্রম ও কর্মসংস্থান, সেইসাথে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য নতুন শ্রমবিধি বাস্তবায়নের ঘোষণা করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ লিখেছেন, “আজ থেকে দেশে নতুন শ্রমবিধি কার্যকর হয়েছে। এই পরিবর্তনগুলি সাধারণ নয়, বরং কর্মীদের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেওয়া একটি বড় পদক্ষেপ। এই সংস্কারগুলি স্বনির্ভর ভারতের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে উন্নত ভারতের লক্ষ্যে নতুন গতি সঞ্চার করবে।” যে ৪তটি নতুন কোড বাস্তবায়ন হয়েছেন সেগুলি হল মজুরি সংক্রান্ত কোড, ২০১৯, শিল্প সম্পর্ক কোড, ২০২, সামাজিক নিরাপত্তা কোড, ২০২০ এবং পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং কর্মপরিবেশ বিধি, ২০২০।
নতুন শ্রম আইনগুলি কী কী?
১) সময়মতো ন্যূনতম মজুরি – প্রতিটি কর্মচারী এখন সময়মতো নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি পাবেন, যা তাঁদের আর্থিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে।
২) যুবকদের জন্য নিয়োগপত্র – চাকরি পাওয়ার পর যুবকদের লিখিত নিয়োগপত্র দেওয়া বাধ্যতামূলক হবে, যাতে কর্মসংস্থান স্বচ্ছ হয়।
৩) নারীদের জন্য সমান অধিকার – নারীরা সমান বেতন এবং সম্মান পাবে, পাশাপাশি সকল ধরণের কাজে সমান সুযোগ পাবেন তাঁরা।
৫) ৪০ কোটি কর্মচারীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা – দেশজুড়ে কোটি কোটি কর্মচারী এখন পিএফ, বীমা এবং অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা পাবেন।
৬) মেয়াদী কর্মীদের জন্য গ্র্যাচুইটি – EPFO জানিয়েছে, স্থায়ী-মেয়াদী কর্মীরা এক বছর কাজ করার পরেই গ্র্যাচুইটি পাওয়ার অধিকারী হবেন।
৭) ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা – ৪০ বছরের বেশি বয়সী কর্মচারীরা প্রতি বছর বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধা পাবেন।
৮) অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ বেতন – কর্মীরা অতিরিক্ত কাজের জন্য দ্বিগুণ বেতন পাবেন।
৯) ঝুঁকিপূর্ণ খাতে কর্মরতদের জন্য সম্পূর্ণ সুরক্ষা – ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা কর্মীদের ১০০% স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়া হবে। এরইসঙ্গে কর্মীরা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সামাজিক ন্যায়বিচার পাবেন।
কারা লাভবান হবেন?
নিশ্চয়ই ভাবছেন কারা লাভবান হবেন? গিগ এবং প্ল্যাটফর্ম কর্মী, চুক্তিভিত্তিক কর্মী, মহিলা কর্মচারী, তরুণ কর্মচারী, এমএসএমই কর্মীরা, বিড়ি ও সিগারেট তৈরী করেন এমন শ্রমিক, বৃক্ষরোপণ কর্মী, ডিজিটাল অডিও-ভিজ্যুয়াল কর্মী, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, ডাবিং শিল্পী এবং স্টান্ট কর্মীরা সুবিধা পাবেন।