“বাংলা কোনও ভাষাই নয়..” বিস্ফোরক পোস্ট অমিত মালব্যের

Amit Malviya

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: নির্বাচনের আগেই এবার বাংলা ভাষা নিয়ে চরম বিতর্ক শুরু হল গোটা রাজনৈতিক মহলে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি থেকে শুরু করে সঙ্গীতশিল্পী রূপম ইসলাম, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীও এই ঘটনায় সরব হয়েছেন। এমতাবস্থায় এবার বাংলা ভাষা-ইস্যুতে দিল্লি পুলিশের পাশে এসে দাঁড়ালেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রীর করা একটি পোস্ট ‘রি-পোস্ট’ করে বাংলা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন তিনি।

দিল্লি পুলিশের সরকারি চিঠি

সম্প্রতি দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে ৮ জনকে আটক করেছিল। সেই সময় তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয় যেগুলি বাংলা ভাষায় লেখা। তখন দিল্লি পুলিশের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে লেখা হয় যে, ‘বাজেয়াপ্ত হওয়া নথিগুলি বাংলাদেশি ভাষায় লেখা এবং সেগুলি হিন্দি এবং ইংরাজিতে অনুবাদ করা দরকার। আমাদের এমন একজন অনুবাদক দরকার যিনি বাংলাদেশি ভাষায় দক্ষ’। আর এই চিঠির অংশ ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। যার জেরে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি বাংলার এই অপমানের যোগ্য জবাব দিতে প্রতিবাদ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন মমতা অভিষেক। তবে এবার মমতাকে কটাক্ষ করে পাল্টা সুর তুললেন অমিত মালিব্য।

বাংলাকে ‘ভাষার তালিকা’ থেকে বাদ দিল অমিত!

সরকারি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে অপমান করা নিয়ে যেখানে রাজ্য রাজনীতির তরজা তুঙ্গে, সেই সময় বিজেপির আইটি সেলের এক দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা অমিত মালব্য দিল্লি পুলিশের সমর্থনে মমতার এক্স হ্যান্ডেলের করা পোস্টের রিপ্লাইতে বিজেপি নেতা একটি পোস্ট করেছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, “দিল্লি পুলিশ অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি ভাষা বলে একদম ঠিক কাজ করেছে। আর এই শব্দ ব্যবহারের একমাত্র কারণ, ওই অনুপ্রবেশকারীদের ভিন্ন বাচনশৈলী, যা সাধারণ ভাবে ভারতে ব্যবহার হয় না।” এখানেই থামেননি, এরপরেই ধ্রুপদী ভাষা বাংলাকে ‘ভাষার তালিকা’ থেকেই বাদ দিয়ে কড়া মন্তব্য করেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান।

আনন্দমঠ এবং জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে মন্তব্য অমিতের

আজ সকালে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে বাংলা ভাষাকে নিয়ে বলে যে, “বাংলা বলে কোনও ভাষা নেই। বাঙালি একটি জাতির নাম নাকি কোনও ভাষা। তাই দিল্লি পুলিশ যখন বাংলাদেশি ভাষার কথা উল্লেখ করছে, এটা তখন অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করছে। এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে ভাষাভাষি মানুষদের কোনও যোগ নেই।” তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশেও তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পোস্টে জাতীয় সঙ্গীত, বন্দেমাতরমের উল্লেখও করেছিলেন। আর সেটাকে টেনে এনেই এবার অমিত মালব্য বলেন, ‘ধরা যাক আনন্দমঠ উপন্যাসটি লেখা হয়েছিল তৎকালীন বাংলায়। কিন্তু আদতে বন্দেমাতরম গানটি রচিত হয়েছিল আলাদা ভাবে সংস্কৃতে যা উপন্যাসে যুক্ত হয়। আমাদের জাতীয় সঙ্গীতও মূলত ব্রাহ্ম ধর্মীয় স্তব হিসেবে রচিত হয়েছিল, যার ভাষা ছিল সংস্কৃতায়িত বাংলা।”

আরও পড়ুন: কঠোর হল নিয়ম! বার্থ সার্টিফিকেট নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের

উল্লেখ্য বাংলা ভাষা বিতর্ক নিয়ে বিজেপি নেতা অমিত মালব্যের পাশাপাশি দিল্লি পুলিশকে সমর্থন করেছিলেন বঙ্গ বিজেপির নয়া রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেছিলেন, “দিল্লি পুলিশ একদম ঠিক শব্দের প্রয়োগ করেছে। বাংলাদেশের একটা বই এনে পড়ুন আর একটা পশ্চিমবঙ্গের বই পড়ুন। কোনটা সুবোধ সরকার লিখেছেন আর কোনটা শফিকুল ইসলাম লিখেছেন, সেটা পড়লেই বোঝা যায়। সুতরাং বাংলায় কথা বললেই সে ভারতীয় হয়ে যাবে তা কিন্তু সঠিক নয়।”

Leave a Comment