সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ল্যাপটপ, কম্পিউটার বলুন না মোবাইল ফোন কিংবা ইলেকট্রিক গাড়ি, সবেতেই দরকার লিথিয়াম (Lithium)। তাই এই লিথিয়ামকে অনেকে সাদা সোনাও বলে। তবে এতদিন এই মূল্যবান ধাতুর জন্য বিদেশের উপরই নির্ভর করত ভারত। তবে এখন সেই ছবি বদলাতে চলেছে!
কারণ গুজরাটের CSMCRI-এর বিজ্ঞানীরা এবার এমন এক প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে, যার সাহায্য পুরনো ব্যাটারি থেকেই 97 শতাংশ বিশুদ্ধ লিথিয়াম উত্তোলন করা যাবে। আর এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধবও বটে! তবে কীভাবে সম্ভব আর কবেই বা বাস্তবায়িত হবে এই প্রযুক্তি?
পুরনো ব্যাটারি থেকেই নতুন লিথিয়াম
প্রসঙ্গত, প্রচলিত পদ্ধতিতে 28 টন ব্যাটারির বর্জ্য থেকে মাত্র 1 টন লিথিয়াম পাওয়া যায়। আর উপরন্তু এই পদ্ধতিগুলি প্রচুর সময় সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল, আর পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই মিশ্রন থেকে প্রথমে নিকেল, কোবাল্ট বা ম্যাঙ্গানিজ আলাদা করে নেওয়া হয়। ফলে লিথিয়ামের বিশুদ্ধতাও নষ্ট হয়।
এই কারণেই ব্যাটারির রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রি এই পথে এতদিন আগ্রহী ছিল না। তবে গুজরাটের CSMCRI-এর বিজ্ঞানীরা এই ধারণাকে এবার পুরোপুরি বদলে দিতে চলেছে। তারা এবার এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যেখানে প্রথমেই ব্যাটারির ব্ল্যাক পাউডার থেকে সরাসরি লিথিয়াম উত্তোলন করা যাচ্ছে।
কীভাবে কাজ করবে এই নতুন প্রযুক্তি?
জানা যাচ্ছে, এই নতুন পদ্ধতিতে এবার অ্যানথ্রাকুইনোন সল্ট এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এগুলি একসঙ্গে কাজ করেই ব্যাটারির ভেতর থেকে লিথিয়ামকে আলাদা করবে। প্রসঙ্গত এতে প্রায় 97% বিশুদ্ধ লিথিয়াম পাওয়া যাবে, যা ব্যাটারি উৎপাদনে সরাসরি ব্যবহারযোগ্য।
উল্লেখ্য, ভারত এখনো পর্যন্ত লিথিয়ামের জন্য 100 শতাংশ আমদানির উপর নির্ভরশীল। আর এই প্রযুক্তি যদি সফলভাবে প্রয়োগ করা যায়, তাহলে শুধু আমদানির ব্যয় কমবে না, বরং দেশের লিথিয়াম উৎপাদনে আরো আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। আর এটি আত্মনির্ভর ভারত মিশনের ক্ষেত্রও বিরাট ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এটি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি হওয়াই ব্যবহারের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়বে।
আরও পড়ুনঃ সময়মত কিস্তি পরিশোধ না করায় ঋণ নেওয়া ব্যাক্তির স্ত্রীকে তুলে নিয়ে গেল ব্যাঙ্ক!
এই নয়া প্রযুক্তি যদি সফলভাবে কাজে লাগানো যায়, তাহলে দেশের ইলেকট্রিক গাড়ির বাজারও হবে অনেক বেশি সাশ্রয়ী। ব্যাটারি নির্মাতা সংস্থারা এবার উচ্চমানের লিথিয়াম সাশ্রয়ী মূল্যে পাবে। এতে ব্যাটারির খরচ কমবে, যা সরাসরি ইলেকট্রিক যানবাহনের দাম কমাবে। এখন শুধু দেখার, এই প্রযুক্তি কবে বাস্তবায়িত হয়।