সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আচ্ছা, যদি বলা হয় যে ২২ বছর বয়সে আপনি কত টাকা রোজগার করতেন, তাহলে বেশিরভাগ লোকই বলবে, খুব বেশি হলে ৫০ হাজার, ১ লক্ষ বা খুব বেশি হলে ২ লক্ষ! তার বেশি তো নয়। তবে আপনি কি জানেন, মাত্র ২২ বছর বয়সে তিন বন্ধু এমন কিছু অর্জন করেছে, যা কোটিপতিদেরও স্বপ্নের বাইরে?
হ্যাঁ, আমেরিকার এআই কোম্পানি Mercor এর তিন তরুণ প্রতিষ্ঠিতা বিশ্বের সবথেকে কম বয়সী কোটিপতি (Youngest Billionaire in World) হয়েছে। আর তাদের সাফল্য ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের রেকর্ডকেও ভেঙে দিয়েছে, যে কিনা ২৩ বছর বয়সে কোটিপতি হয়েছিল। সবথেকে বড় ব্যাপার, এই তিনজনের মধ্যে দু’জন ভারতীয়। হ্যাঁ, অবাক হলেও এক্কেবারে সত্যি। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কারা তারা? জানতে চোখ রাখুন প্রতিবেদনটিতে।
মাত্র ২২ বছর বয়সেই বিলিয়নেয়ার
আসলে আমরা যাদের কথা বলছি, তারা তিনজন ক্যালিফোর্নিয়ার একই স্কুলে পড়াশোনা করত। আর সেখান থেকেই তাদের মূলত বন্ধুত্বের সূচনা হয়। এই তিন বন্ধুর নাম ব্রেন্ডন ফুডি, আদর্শ হিরেমথ এবং সূর্য মিধা। প্রথম দিকে আদর্শ হিরেমথ এবং সূর্য মিধা স্কুলে অসাধারণ পারফর্ম করত। এমনকি তারা এক বছরেই তিনটি মার্কিন জাতীয় প্রতিযোগিতা জিতেছিল, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। অবাক করার বিষয়, তারা দুজনেই ভারতীয় বংশধ্ভূত।
এরপর যখন তারা ব্রেন্ডন ফুডির সঙ্গে দেখা করে, তখন থেকেই তারা তিনজন একসাথে বড় কিছু করার স্বপ্ন স্থির করে। এরপর তারা বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী পিটার থিয়েলের কাছ থেকে থিয়েল ফেলোশিপ পেয়েছিলেন। হ্যাঁ, তাদেরকে কলেজ ছেড়ে নিজের স্টার্টআপ তৈরি করার জন্য ১ লক্ষ ডলার দিয়েছিলেন তিনি। আর সেখান থেকেই বদলে যায় তাদের ভাগ্যের মোড়।
শুরু হয় Mercor এর যাত্রা
প্রাথমিকভাবে তাদের মূল লক্ষ্য ছিল ভারতীয় ইঞ্জিনারদের সঙ্গে ফ্রিল্যান্স কোডার খুঁজছে, এমন আমেরিকান কোম্পানিগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করা। আর সেই লক্ষ্য স্থির করেই ২০২৩ সালে তারা শুরু করে Mercor কোম্পানি। মূলত তারা এআই-ভিত্তিক সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করেছিল, যা তাদেরকে প্রার্থীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে সাহায্য করত। এমনকি সেখানকার বিশেষজ্ঞরা এআই মডেলগুলিকে আরও ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতেও সহায়তা করে। এভাবেই কোম্পানিটিকে তারা নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ কখনও ব্যবসায় যুক্ত হতে দেননি! টাটা ট্রাস্টের অশান্তির মধ্যে মুখ খুললেন রতন টাটার বোনেরা
আশ্চর্যজনকভাবে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই Mercor ৩৫০ মিলিয়ন ডলার তহবিল সংগ্রহ করে ফেলে এবং তাদের মোট বাজার মূলধন দাঁড়ায় ১০ বিলিয়ন ডলার। আর কোম্পানিটির এখন বার্ষিক আয় হয় প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার, যা কয়েক মাস আগে ছিল ১০০ মিলিয়ন ডলার। এমনকি ফোর্বস তাদের ২০২৫ সালের অনূর্ধ্ব ৩০ তালিকায় এবং ক্লাউড ১০০-তেও এই তিনজন বিলিয়নেয়ারকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। মোদ্দা কথা, এরাই পৃথিবীর সবথেকে কনিষ্ঠ কোটিপতি।