সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ যত সময় এগোচ্ছে ততই সাইবার প্রতারণার ঘটনা বেড়েই চলেছে। সব বয়সের মানুষই এখন সাইবার প্রতারকদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব খুইয়ে সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছেন। এবার এই প্রতারকদের নজরে পেনশন প্রাপকরা। অনলাইনে পেনশন লাইফ সার্টিফিকেট (Life Certificate) আপডেট করার নাম করে প্রবীণদের থেকে সব ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা তারপর নিজেদের কাজ সেরে ফেলেছে। সম্প্রতি পুলিশের তরফে এমন কিছু তথ্য শেয়ার করা হয়েছে যা শুনলে আপনারও চোখ কপালে উঠে যেতে পারে।
পেনশন সার্টিফিকেটের নামে বাড়ছে প্রতারণা
বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় অনলাইনে পেনশন লাইফ সার্টিফিকেট আপডেট করার নামে বেশ কিছু প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এত সচেতনতামূলক প্রচার করা সত্ত্বেও মানুষ কীভাবে প্রতারণা শিকার হচ্ছেন? কীভাবে হচ্ছে এই প্রতারণা? পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারকরা প্রবীণদের টার্গেট করে ফোন করছে। ‘পেনশন লাইফ সার্টিফিকেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ফোন করছি’ বলে দাবি করছে প্রতারকরা। ফোনেই আপডেট করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তারা সংশ্লিষ্ট পেনশন প্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় নথি হাতিয়ে নিচ্ছে।
প্রতারকরা একটি ‘ডট এপিকে’ ফাইল পাঠাচ্ছে ফোনে। বলা হচ্ছে, ওই ফাইলে ক্লিক করলেই অনলাইনে পেনশন লাইফ সার্টিফিকেট আপডেট হয়ে যাবে। সেই কথায় বিশ্বাস করে প্রবীণরা ফাইল আপলোড করে ফেলছেন। সঙ্গে সঙ্গে হ্যাক হয়ে যাচ্ছে মোবাইল। তারপরই ওই পেনশনভোগী নাগরিক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠে যাওয়ার এসএমএস পাচ্ছেন। গত ২১ অক্টোবর লেকটাউনের এক ৭২ বছরের বৃদ্ধ বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান যে কীভাবে তাঁকে প্রতারণার শিকার বানানো হয়েছে।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন যে তাঁকেও নাকি ফোন করে প্রতারকরা ‘ডট এপিকে’ ফাইল আপলোড করতে বলে। তিনি সেই কাজ করার পর তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায়। বিধাননগর দক্ষিণ থানার এক ৮৫ বছরের বৃদ্ধও একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তিনি গত ২৮ অক্টোবর বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া যায় ৯ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। এহেন পরিস্থিতিতে পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফোনে কেউ ব্যক্তিগত নথি শেয়ার করবেন না।