প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বাঙালিদের কাছে শীত যতই আহ্লাদি ঋতু হোক না কেন, এই সময়ে আমাদের শরীরে হাজারটা সমস্যা তৈরি হয়। যদিও গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা, কারও কারও ত্বক বছরভরই শুষ্ক থাকে। কিন্তু শীত এলে তো কথাই নেই ত্বকের সামনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ডিহাইড্রেশন। শীতল হাওয়ায় ত্বক থেকে দ্রুত জলশূন্যতা হয়, যার ফলে হাতে পায়ে এবং মুখে টান পড়ে, রুক্ষতা বাড়ে। তাই দরকার কিছু জরুরী শীতকালীন স্কিন কেয়ার টিপস (Winter Skin Care Tips)।
সাধারণত কালীপুজোর পর থেকে সময় যতই এগোয়, ক্রমশ বদলাতে থাকে আবহাওয়ার ধরন। এই সময় থেকে বাতাসে ক্রমশ জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমতে থাকে আর তার জেরেই ত্বক ক্রমে শুষ্ক এবং খসখসে হয়ে যায়। তাই এক্ষেত্রে দরকার সঠিক স্কিনকেয়ার, যা ত্বককে আর্দ্র রাখবে, উজ্জ্বলতা ফেরাবে এবং সারা দিন নরম–মসৃণ রাখবে। চলুন আমাদের আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক কিছু ঘরোয়া টোটকা যা শীতকালে আমাদের ত্বককে আর্দ্র এবং উজ্জ্বল করে তুলবে।
স্কিন টাইপ ময়েশ্চারাইজার
অন্যান্য ঋতুতে ত্বকে যেমন একপ্রকার ন্যাচরাল ময়েশ্চার তৈরি হয়, কিন্তু শীতে সেই ন্যাচরাল ময়েশ্চার তৈরি হয়না। তার অন্যতম কারণ হল শীতে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকলে। তাই সেই কারণে শীতে জেল-ক্রিম নয়, বরং ক্রিমি বা বাটার-বেসড এবং হাইড্রেটিং সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। এতে সেরামাইডস, শিয়া বাটার বা গ্লিসারিন থাকায় ত্বকের আর্দ্রতা দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখে। ফলে একদমই থাকেনা রুক্ষভাব
মধু
শীতকালে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে যেই নামটা আগে উঠে আসে সেটি হল মধু। নিয়মিত স্নানের পর প্রতিবার মুখ ধোয়ার ভেজা অবস্থায় কয়েক ফোঁটা মধু লাগিয়ে মিনিট কুড়ি শুকিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা করতে হবে। তারপর জলের ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে নিন। দেখবেন, ত্বক রুক্ষ হবে না, উল্টে ঝলমল করবে। কখনও কখনও এই মধুর সঙ্গে দুধের সর ও ময়দা মিশিয়ে একটি ফেস প্যাক বানিয়ে নিতে পারবেন। এটিও বেশ দারুন কার্যকরী।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং জল পান
শীতকালে জল খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। তাই বেশি করে জল খাওয়া, ভিটামিন–সমৃদ্ধ ফল খাওয়া খুব জরুরি। এছাড়াও খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি ঠিকঠাক ঘুমোনো খুব জরুরি। তবে এক্ষেত্রে শরীর চর্চার জন্য নিয়মিত যোগব্যয়াম করা বেশ জরুরি, এতে যেমন সারাদিনের স্ট্রেস দূর হয় ঠিক তেমনই পজিটিভ এনার্জিও বেশ বাড়ে।
আরও পড়ুন: SSC-র সব মামলা এবার হাইকোর্টে! বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
কাঁচা দুধের ব্যবহার
শীতকাল বলে যে মুখে ব্রণ থাকবে না, এই ভাবনাটা ভাবা সম্পূর্ণ ভুল। তবে এক্ষেত্রে ট্রিটমেন্টটা হয় অন্যরকম। মুখে ব্রণের পরিমাণ বেশি থাকলে শীতকালে দুধের সর বাদ দিয়ে কাঁচা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে কর্পূর আর তুলসী পাতা বাটা। দশ থেকে কুড়ি মিনিট রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশচারাইজার ব্যবহার করে নিন, সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করলেই ত্বকের যেমন জেল্লা ফিরে আসবে ঠিক তেমনই আবার ব্রণের পরিমাণ কমবে।
জেন্টল ক্লিনজিং
শীতকালে ত্বক দ্রুত শুকিয়ে যায়, তাই খুব বেশি স্ট্রিপিং ক্লিনজার নয়। হালকা ফোমিং বা ক্রিম-বেসড ক্লিনজার ব্যবহার করায় শ্রেষ্ঠ, যাতে ত্বক তার প্রাকৃতিক তেল না হারিয়ে ফেলে। এরপর অ্যালকোহল–ফ্রি হাইড্রেটিং টোনার বা রাইস–ওয়াটার এসেন্স শীতে দারুণ কাজ করে। এগুলো ত্বকের ওপর আর্দ্রতার এক স্তর তৈরি করে, যা ত্বককে বেশ ভালো রাখে।