প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সামনেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। তাই নির্বাচনের আগে প্রতিটি যোগ্য নাগরিকের নাম যাতে ভোটার তালিকায় থাকে, সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে এক নয়া পন্থা অবলম্বন করল। প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন করে ভোটার তালিকা (Voter Lists) সংশোধনের লক্ষ্যে বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করল। তবে শুধু বিহার নয় এবার এই একই পন্থা অবলম্বন করা হবে বাংলাতেও!
রাজ্যে হবে এসআইআর!
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে শেষ বার এসআইআর প্রকাশিত হয়েছিল ২০০২ সালে। তার উপর রাজ্যে একের পর এক ভুয়ো নথির দৌলতে বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানের নাগরিকের উপস্থিতিও টের পাওয়া গিয়েছে। তাই সেক্ষেত্রে নির্বাচনের সমীক্ষাতে নানা গোলযোগ দেখা গিয়েছে।
আর সেক্ষেত্রে তাই বাংলায় নির্বাচন তালিকায় ভুয়ো নথির সমস্যা দূর করতে হলে এসআইআর করা খুব জরুরি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে বাংলায় কীভাবে হবে এই এসআইআর?
কীভাবে করা হবে এই সমীক্ষা?
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম থাকা প্রত্যেকের বাড়িতে সমীক্ষার কাজটি করতে হবে। সেক্ষেত্রে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে। তাঁর নেতৃত্বেই জেলাশাসক, ভোটের অতিরিক্ত জেলাশাসক, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার, অতিরিক্ত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার এবং বুথ লেভেল অফিসারেরা এই সমীক্ষা করবে।
জানা গিয়েছে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে একটি ফর্ম দিয়ে আসা হবে, যেখানে পরিবারগুলোকে প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পূর্ণ করতে হবে। এবং সবশেষে সেই তথ্যগুলি যাচাইকরণ করতে হবে।
ভুয়ো ভোটার ঠেকাতে নয়া উদ্যোগ
এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক নির্বাচনের কমিশনার কর্তা জানিয়েছেন যে, “এই তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে না, তাঁদেরই পারিবারিক এবং এ দেশের নাগরিকত্বের প্রমানিকরণের জন্য নথি যাচাই করতে হবে। কোনো বিশেষ দল নয়, গোটা প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিও যুক্ত থাকবেন। তাই এক্ষেত্রে কোনো পক্ষপাতিত্ব থাকবে না। দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার স্বার্থে এবং সরকারি অর্থের অপচয় ঠেকাতে ভুয়ো ভোটার বাদ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।”
জানা গিয়েছে এই নতুন পদ্ধতিতে প্রতিটি নথি কমিশনের ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকার ফলে যে যখনই ভোটার কার্ড পান না কেন, তাঁর যোগ্যতা প্রমাণে কোনও বাধা থাকবে না।
আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তদের স্বস্তি, আবারও দরপতন সোনার, রুপো নিয়ে দুঃসংবাদ! আজকের রেট
তবে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকারের খুব একটা মত নেই। এমনকি দেশে অনুপ্রবেশের সংখ্যার বাড়বাড়ন্তের দায় ঠেলেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তবে প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন যে, অনুপ্রবেশ-নজরদারিতে কেন্দ্রের খামতি যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনই নথি জোগাড়ে রাজ্যের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনের একাংশের ভূমিকা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই এ বার শীঘ্রই এসআইআর শুরু হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গেও। এবং ক্রমে এসআইআর হবে গোটা দেশে।