হাইওয়েতে আচমকা ব্রেক গাড়ির, ধাক্কা দিয়ে পা হারালেন বাইক চালক! দোষ কার?

Supreme Court Verdict

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: হাইওয়েতে আচমকা কোনো বড় গাড়ি ব্রেক কষায় যদি কোনো বাইক আরোহী আহত হয় বা মৃত্যু ঘটে তাহলে সেক্ষেত্রে দোষ কার? কার উপর বর্তাবে ক্ষতিপূরণ? এ নিয়েই 2017 সালে শুরু হয়েছিল দীর্ঘ আইনি লড়াই। অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট দীর্ঘ 8 বছর পর ঐতিহাসিক রায়ের (Supreme Court Verdict) পথে হাঁটল।

দুর্ঘটনাটি কীভাবে হয়েছিল?

রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, 2017 সালের 7 জানুয়ারি এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। মাত্র 20 বছর বয়সে এক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া বাইক চালক তার এক বন্ধুকে নিয়ে হাইওয়েতে বাইক চালাচ্ছিলেন। আর ঠিক তখনই সামনে একটি গাড়ি কোনোরকম সংকেত ছাড়াই দাঁড়িয়ে পড়ে। আর প্রচণ্ড গতিতে ছুটি আসা মোটরসাইকেলটি গাড়িটির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে এবং রাস্তায় ছিটকে পড়ে ওই যুবক। আর সে মুহূর্তে পেছন থাকা আসা একটি বাস ছেলেটির বা পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়।

হাইকোর্ট দিল বিরাট রায়

প্রথমে এই দুর্ঘটনার মামলাটি ট্রাইব্যুনালে উঠেছিল। ট্রাইব্যুনাল 91.62 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করলেও মোটরসাইকেলের চালকের 20% দায় দেখিয়ে তা 73.29 লক্ষ টাকায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে মাদ্রাজ হাইকোর্ট তিন পক্ষের মধ্যেই এই দায় ভাগ করে গাড়ি চালককে 40%, মোটরবাইক চালককে 30% আর বাস চালককে 30% ধার্য করে। সেই হিসেবে মোট ক্ষতিপূরণ কমে দাঁড়ায় 58.53 লক্ষ টাকা। তবে এই রায়ে চুপ করে থাকেনি ওই তরুণ। তিনি সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি আবেদন করেন, আর সেখানেই নেওয়া হয় বড়সড় সিদ্ধান্ত।

Bar & Bench এর রিপোর্ট অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চ বলেছেন, হাইওয়েতে দ্রুতগতির গাড়ির আচমকা থামা সত্যি ঝুঁকিপূর্ণ। গাড়ি থামানোর আগে অবশ্যই চালকের যথাযথ ইন্ডিকেটর বা সংকেত দেওয়া উচিত। আর সেদিন বেপরোয়া হওয়ার ফলেই ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল।

আদালত আরো জানিয়েছে, চালকের বক্তব্য অনুযায়ী গাড়ির মধ্যে থাকা গর্ভবতী স্ত্রীর হঠাৎ করে বমি পাওয়ার কারণেই তিনি ওই গাড়ি থামিয়ে দেন। যদিও তা মানবিক কারণে হলেও, আইনত দিক থেকে পিছনের গাড়িগুলিকে সতর্ক করা তাঁর দায়িত্ব ছিল। তবে তিনি তা করেননি। 

আরও পড়ুনঃ ভূমিকম্পের পর রাশিয়ায় জেগে উঠল আগ্নেয়গিরি, বেরোচ্ছে ফুটন্ত লাভা

ক্ষতিপূরণ বাড়ানো হল 91.39 লক্ষ টাকা

অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় গাড়ি চালকের দায় 50%, বাস চালকের 30% আর মোটরসাইকেল চালকের 20% দায় বলে ঘোষণা করল। আর সেই হিসেবে এবার মোটরসাইকেল চালককে দেওয়া ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়িয়ে 91.39 লক্ষ টাকা ধার্য করেছে আদালত। সেই সঙ্গে আবেদনপত্র জমার দিন থেকেই বার্ষিক 7.5% সুদ সহ সমস্ত টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Leave a Comment