১৭ বছর বয়সে JEE উত্তীর্ণ, Microsoft-এ ৫৫ লক্ষ টাকার চাকরি পেল ফেরিওয়ালার মেয়ে

সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ ভাগ্য হয়তো একেই বলে। একজন সামান্য ফেরিওয়ালার মেয়ে কিনা মাইক্রোসফটে চাকরি পেলেন। তাও কিনা ৫৫ লক্ষ টাকার। শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই সত্যি। হিসারের বলসামান্দ গ্রামের বাসিন্দা সিমরান মাইক্রোসফটে ৫৫ লক্ষ টাকার চাকরি পেয়েছেন। তার বাবা বাসনপত্র বিক্রি করেন। জানলে অবাক হবেন, সেই বাবার মেয়ে সিমরান প্রথম প্রচেষ্টায় JEE পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং তারপরে IIT মান্ডি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন।

প্রথম প্রচেষ্টাতেই JEE পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

আসলে, সিমরান হিসারের বালসমান্ড গ্রামের বাসিন্দা। সিমরানের পরিবারের মতে, সিমরান ১৭ বছর বয়সে প্রথম প্রচেষ্টাতেই JEE পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এর পরে, তিনি IIT মান্ডি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হন। তবে, সিমরানের আগ্রহ ছিল IT-তে। তার স্বপ্ন ছিল মাইক্রোসফ্টে কাজ করা, তাই তিনি অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে কম্পিউটার বিজ্ঞানও অধ্যয়ন করেন। হিসারের বাসিন্দা রাজেশ কুমার বাসনপত্র বিক্রি করেন। বড় পরিবার নিয়ে থাকেন মাত্র দু কামরার একটি ঘরে।

বাসনপত্র বিক্রি করে রাজেশ কুমার প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করেন। তিনি যে টাকা আয় করেন তা দিয়েই তাঁদের সংসার চলে। সিমরান পরিবারের বড় মেয়ে। তার দুই ছোট বোন এবং এক ছোট ভাই আছে। সিমরানের বাবা-মা খুব বেশি শিক্ষিত নন, তবুও তারা তাদের মেয়েকে পড়াশোনার জন্য হিসারে পাঠিয়েছিলেন। সিমরান জেইই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তার বাবা-মায়ের ত্যাগের প্রতিদানও দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ চাকরি বা বিয়ের পর শহর পালটেছেন? অনলাইনে করতে পারবেন SBI অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার

ক্যাম্পাস সিলেকশনের সময়, সিমরান মাইক্রোসফ্ট হায়দ্রাবাদে ইন্টার্নশিপের জন্য নির্বাচিত হন এবং ২ মাস ইন্টার্নশিপের পর, সিমরান ৩০০ শিশুর মধ্যে সেরা ইন্টার্ন স্টুডেন্টের পুরস্কার জিতে নেন। এরপর আমেরিকায় মাইক্রোসফটের বিদেশী প্রধান সিমরানকে একটি পুরষ্কার প্রদান করে সম্মানিত করেন। এর পরে বিদেশী প্রধান আমেরিকা থেকে সিমরানের সাথে দেখা করতে ভারতে আসেন। সেইসময়ে সিমরান চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পান। সিমরান ৩০শে জুন চাকরিতে যোগদান করেছেন।

মেয়ের সাফল্যে খুশি পরিবার

সিমরানের মা কবিতা বলেন, “আমি মাত্র দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। আমি নিজেই আমার মেয়েকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াই। এরপর আমার স্বামী তাকে পড়াশোনার জন্য হিসারে পাঠিয়েছিলেন। সে ২০২১ সালে জেইই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সিমরানের সাফল্যে আমরা খুবই খুশি। আমার মেয়েরা এবং অন্যান্য মেয়েরা সিমরানের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে এগিয়ে যাবে।”

Leave a Comment