সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: 2014 সালে উত্তরাখণ্ডে 7 বছরের একটি শিশুর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। লিটল নির্ভয়া নামে পরিচিত ওই মামলায় ট্রায়াল করতে শুরু করে হাইকোর্ট এক অভিযুক্তকে মৃত্যুদন্ডের সাজা দিয়েছিল। তবে প্রায় এক দশক পর সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) বিরাট সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। নেপথ্যে কী কারণ?
কেন এমন রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট?
আসলে বুধবার বিচারপতি বিক্রম নাথ, সঞ্জয় কোল এবং সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আগে আদালতকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এই শাস্তি জীবনের সঙ্গে জড়িত সবথেকে বড় পদক্ষেপ যা শুধুমাত্র রেয়ারেস্ট অফ রেয়ার মামলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয়। সামান্যতম সন্দেহ থাকলে মৃত্যুদণ্ড কোনওভাবেই দেওয়া যায় না।
আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, গোটা মামলাটি শুধুমাত্র পরিস্থিতিগত প্রমাণের উপর ভিত্তি করেই ছিল। প্রসিকিউশন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নির্ভুল এবং অটুট প্রমাণের চেইন তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। তদন্তে একাধিক ঘাটতিও ধরা পড়ে। ফলে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি এই মামলায় আরেক অভিযুক্তকে 7 বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাকেও বেকসুর খালাস করে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
কী ঘটেছিল ঐদিন?
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, 2014 সালের 29 এপ্রিল উত্তরাখণ্ডের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিল ওই সাত বছরের একটি শিশু। পরের দিন তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ দাবি করেছিল যে শিশুটিকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতেই 2016 সালের ট্রায়াল কোর্ট অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। 2018 সালে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টও সেই রায় বহাল রাখে।
আরও পড়ুনঃ AIDS আক্রান্ত জাকির নায়েক! খবর ছড়াতে নিজেই মুখ খুললেন বিতর্কিত ধর্ম প্রচারক
তবে সুপ্রিম কোর্টের মতে, যখন প্রমাণে দুর্বলতা রয়েছে, তখন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া কোনওভাবেই গ্রাহ্য নয়। বিচারপতি সন্দেপ মেহতা রায় লেখার সময় বিশেষভাবে সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তি দিতে হলে অভিযোগ প্রমাণের কোনও ফাঁকফোকর থাকা চলবে না। এখন প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, তাহলে শিশুটির ন্যায় বিচার কোথায়? সব উত্তর সময় বলবে।