সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: প্রতিবছর লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়া পেনশনভোগীদের জন্য সবথেকে বড় দুশ্চিন্তা। লম্বা লাইন থেকে শুরু করে বারবার ব্যাঙ্কে যাওয়া, শারীরিক অসুবিধার ঝক্কি পোহাতে হয় তাদের। তবে সেই ঝামেলা দূর করতে এবার আনা হলো ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট (Digital Life Certificate)। বাড়িতে বসেই বায়োমেট্রিক যাচাই করে এবার এই সার্টিফিকেট তৈরি করে নিতে পারবেন এবং সেই তথ্য সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক বা পেনশন দপ্তরে পাঠানো হবে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই হঠাৎ করে দেখছে যে, তাদের ফোনে একটি এসএমএস আসছে, যেখানে লেখা “Your Digital Life Certificate has been rejected”। তবে এই মেসেজ দেখেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পেনশনভোগীরা। কারণ, তারা ভাবছে সার্টিফিকেট কেন বাতিল হল? এবার তাহলে কী হবে? তবে চিন্তা করার কোনও কারণ নেই। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন আজকের প্রতিবেদনে।
ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট কী?
ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট হল আধার ভিত্তিক বায়োমেট্রিক সার্টিফিকেট। এর মাধ্যমে আপনি সক্রিয় পেনশনভোগী কিনা তার প্রমাণ পাওয়া যায়। এটি তৈরি করার সময় আধার নম্বর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা চোখের স্ক্যান দরকার পড়ে এবং তৈরি হয়ে গেলে তা সরাসরি পেনশন ডিসবার্সিং এজেন্সির কাছে চলে যায়।
আপনার লাইফ সার্টিফিকেট জমা হয়েছে নাকি বাতিল তা কীভাবে জানবেন?
আপনার লাইফ সার্টিফিকেটের স্ট্যাটাস আপনি খুব সহজে অনলাইনের মাধ্যমে চেক করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে শুধুমাত্র jeevanpramaan.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের Pramaan ID আইডি দিয়ে সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে হবে। আর সেখানে স্পষ্ট লেখা থাকবে Accepted, Pending, অথবা Rejected। যদি কোনও এসএমএস নাও আসে, তাহলে এখান থেকে আপনি সঠিক তথ্য পেতে পারেন।
ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট বাতিল হয় কেন?
এবার আসা যাক আসল কারণে। ভুল তথ্য দিলে কিংবা বায়োমেট্রিক না মিললে আপনার ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট বাতিল হবে। এর মধ্যে সবথেকে বড় ভুলগুলি হল- ভুল পিপিএফও নম্বর, ভুল ব্যাঙ্কের তথ্য, আধারের সঙ্গে নম্বর বা জন্ম তারিখের অমিল, ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা চোখের স্কিন সঠিকভাবে না মেলা এবং বয়সজনিত কারণে বায়োমেট্রিক যাচাই না হওয়া।
ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট বাতিল হলে কী করবেন?
যদি কোনও কারণে আপনার ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে যায়, তাহলে আপনাকে নিন্মলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে—
- প্রথমে আপনাকে পেনশন ডিসবার্সিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তারা আপনাকে জানাবে যে কোন তথ্য ভুল দেওয়া হয়েছে।
- এরপর আপনাকে নতুন একটি Pramaan ID আইডি জেনারেট করতে হবে।
- এরপর সেখানে নাম, জন্ম তারিখ, পিপিএফ নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং আপনার আধার কার্ডে যা আছে, সেই সমস্ত তথ্য ইনপুট করতে হবে।
- এরপর সঠিকভাবে বায়োমেট্রিক স্ক্যান করতে হবে। মনে রাখবেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং চোখের স্ক্যান যেন সঠিকভাবেই আপলোড হয়।
আরও পড়ুনঃ কল্যাণের অভিযোগের ভিত্তিতে চিরুনি তল্লাশি রাজভবনে! চলছে লাইভ সম্প্রচার
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, যারা পুনর্বিবাহ করেছেন বা পুনরায় চাকরি পেয়েছেন, তাদের জন্য ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেটের কোনওরকম সুবিধা নেই। তাদের অফলাইনে সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়।