সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: যখন ২৩ বছর বয়সে সাধারণ মানুষ নিজের কেরিয়ার কোথায় শুরু করবে সেই নিয়ে চিন্তা করে, সেখানে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন অঞ্জলি সারদানা (Anjali Sardana) নামের এক মহিলা, যা অনেকের কাছে ৪০ বছরের স্বপ্নকেও হার মানাবে। হ্যাঁ, আমেরিকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থার উচ্চ বেতনের চাকরি, আরামদায়ক জীবন ছেড়ে দেন অঞ্জলি। কারণ, তাঁর লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র অর্থ উপার্জন নয়, বরং ভারতের সামাজিক জীবনের সমস্যা সমাধান করা।
এই ভাবনা মনে পোষন করে অঞ্জলি ভারতে ফিরে এসে দেখেন যে, গৃহ সহায়িকা বা ডোমেস্টিক ওয়ার্কার সেক্টর সম্পূর্ণ অগোছালো। কাজের জন্য অ্যাপ ছিল ঠিকই, কিন্তু কাজের গুনগত মান খুব একটা ভালো না। এমনকি গ্রাহকদের বিশ্বাসের ঘাটতি আর শ্রমিকদের কোনও সম্মান দেওয়া হয় না। পাশাপাশি নিরাপত্তার অভাব তো রয়েছেই। তবে সবথেকে বড় ব্যাপার, অনেকে অঞ্জলিকে সতর্ক করেছিলেন যে, এই সেক্টর বদলানো সম্পূর্ণ অসম্ভব আর ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু তিনি সেখানে দমেনি।
অসাধ্য সাধন করে ফেললেন অঞ্জলি
এসি রুমে বসে শুধুমাত্র আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করার মেয়ে নন অঞ্জলি। তিনি সরাসরি মাঠে নামেন এবং কথা বলেন গৃহকর্মীদের সঙ্গে, সাধারণ পরিবারের সঙ্গে আর দৈনন্দিন সমস্যার সম্মুখীন হওয়া মানুষের সঙ্গে। আর সেই বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই জন্ম নেয় তাঁর স্টার্টাপ সংস্থা Pronto। যদিও তাঁর যাত্রাপথ মোটেও সহজ ছিল না। কারণ, প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা, সঠিক টিম করা, লড়াই আর সীমিত রিসোর্সে কাজ চালানোর কারণে অনেক সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। তবে মাত্র ৭ মাসের মধ্যেই Pronto ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যা ভারতীয় মুদ্রায় ১০০ কোটি টাকার বেশি।
আরও পড়ুন: ভারতকে চাপে ফেলার মতলব, বাংলাদেশের বিদ্বেষের পিছনে ভূমিকা পাকিস্তানের ISI-র?
বর্তমান সময়ে Pronto ২৪৩ জনের এক শক্তিশালী টিম। পাশাপাশি ১০০০ এর বেশি সার্ভিস প্রফেশনালকে কাজের সুযোগ দিয়েছে, আর কর্মীদের আত্মনির্ভর হওয়ার মূল মডেল। পাশাপাশি বিশ্বাস, নিরাপত্তা, সম্মানের উপর ভিত্তি করে তৈরি এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম Pronto তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনকি Pronto-কে শুধুমাত্র স্টার্টাপ সংস্থা বলা যায় না, বরং এই সেক্টরের মানুষের জীবনেও সম্পূর্ণ বদলে এনেছেন অঞ্জলি দেবী।