ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়ায় হস্তক্ষেপ করবে আয়কর দফতর? জানাল PIB

Income Tax Department

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল, আয়কর দফতর (Income Tax Department) নাকি এবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ইমেইল থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে সরাসরি নজরদারি করবে। তবে এবার সেই দাবির ফ্যাক্ট চেক করল কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য সংস্থা প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বা পিআইবি। আসলে কি এই দাবি সত্যি?

কী বলল পিআইবি?

পিআইবি বলছে, সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়া ওই দাবি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর এবং ভুয়ো। ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে চালু হতে চলা ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্ট ২০২৫ অনুযায়ী করদাতাদের ডিজিটাল পরিষেবায় কোনওরকম নজরদারি করা হবে না। পিআইবির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যতক্ষণ না পর্যন্ত কোনও করদাতার বিরুদ্ধে গুরুতর কর ফাঁকির অপারেশন শুরু হচ্ছে, ততক্ষণ আয়কর দফতরের কোনও ক্ষমতা নেই ডিজিটাল পরিষেবায় হাত ঢোকানোর। নতুন আইনে যে সমস্ত ক্ষমতার কথা উল্লেখ রয়েছে তা শুধুমাত্র ‘সার্চ অ্যান্ড সার্ভে’ অভিযানের জন্যই। যে সমস্ত ক্ষেত্রে বড় অংকের কর ফাঁকি দেওয়ার প্রমাণ রয়েছে এবং তল্লাশি অভিযান চলছে, সেই ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষ এতে কোনও প্রভাবিত হবে না।

আসলে সম্প্রতি @IndianTechGuide এর একটি এক্স হ্যান্ডেল পোস্টে দাবি করা হয়েছিল, আয়কর দফতর নাকি ডিজিটাল নজরদারি চালাতে পারে। তবে পিআইবি জানাল, এই দাবি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর। এমনকি এগুলি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে কালো টাকা আর বড় আকারের কর ফাঁকি রুখার জন্য। সাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়। এমনকি এও জানানো হয়েছে, ‘সার্চ অ্যান্ড সার্ভে’ চলাকালীন ডকুমেন্ট ও প্রমাণ বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা আয়কর দফতরের কাছে রয়েছে। এই ক্ষমতা ১৯৬১ সালের ইনকাম ট্যাক্স আইনেও ছিল এবং তা নতুন করে যে চালু হচ্ছে এমনটাও নয়।

আরও পড়ুন: ৮ দিন পরেই লাগু হচ্ছে অষ্টম পে কমিশন, কতটা বাড়তে পারে কর্মীদের বেতন? রইল হিসেব

নতুন ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্টে কী পরিবর্তন আসবে?

জানিয়ে রাখি, আগামী ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে দেশজুড়ে নতুন ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্ট চালু হচ্ছে। আর আগের ১৯৬১ সালের আইন বাতিল হবে। সরকার দাবি করছে, এই আইন সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং সহজ হবে। তবে আগের আইনে মোট ৮৬৯টি ধারা ছিল। নতুন আইনে ধারাগুলি আরও সহজ করা হচ্ছে, যাতে করদাতাদের কোনওরকম অসুবিধা না হয়। এমনকি পুরনো আইনের ১৩২ ধারা অনুযায়ী আয়কর আধিকারিকরা তল্লাশি অভিযানের সময় সম্পত্তিতে প্রবেশ করতে পারতেন। পাশাপাশি নথি বা ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র বাজেয়াপ্তও করতে পারতেন এবং ডিজিটাল ডেটার ক্ষেত্রে অ্যাক্সেস পেতেন। তবে নতুন আইনে স্পষ্ট উল্লেখ করা রয়েছে, ২৪৭ ধারা অনুযায়ী আয়কর আধিকারিকরাপ্রয়োজন হলে কম্পিউটার সিস্টেম বা কোনও ডিজিটাল পরিষেবায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে। তবে শুধুমাত্র ‘সার্চ অ্যান্ড সার্ভে’ অভিযানের মধ্যেই। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দাবি ঘুরে বেড়াচ্ছিল তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সাধারণ নাগরিকের ডিজিটাল পরিষেবায় কোনওরকম হস্তক্ষেপ করতে পারবে না আয়কর দফতর। অযথা গুজব থেকে দূরে থাকুন।

Leave a Comment