হাত মেলাল রিলায়েন্স সহ আরও ৩ সংস্থা! দেশে তৈরি হচ্ছে বিরাট কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের পশ্চিম দিকে এবার ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনা ঘটতে চলেছে! হ্যাঁ, গুজরাট (Gujrat) এবার দেশের সাবমেরিন কেবল ব্যবস্থায় নিজেদের নাম লেখানোর জন্য পা বাড়িয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সহ আরো তিন সংস্থার সঙ্গে হাতে হাত মেলাবে কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের (Cable Landing Station) জন্য।

বলে রাখি, কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনগুলি এমন প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে আসা ফাইবার অপটিক কেবলের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ডেটা ভারতে প্রবেশ করে। এমনকি দেশের ইন্টারনেট ইনফ্রাস্ট্রাকচারে সেই ডেটা সংযুক্ত হয়ে ইন্টারনেটের গতি বাড়ায়।

ডিজিটাল কানেক্টিভিটির নয়া দিগন্ত খুলবে গুজরাট

সম্প্রতি গুজরাট সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের মুখ্যসচিব মোনা খান্ধার জানিয়েছেন যে, আমাদের রাজ্যে একাধিক কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছি। আর আমরা সেই প্রস্তাবগুলিকে খতিয়ে দেখছি।

তাঁর আরও দাবি, প্রস্তাবগুলির মধ্যে দুটি সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে এবং দুটি দক্ষিণ গুজরাটে স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও সংস্থাগুলির নাম এখনো সরকারি গোপনীয়তার কারণে প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু জানা যাচ্ছে, সবগুলোই বেসরকারি সংস্থা।

কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন আসলে কী?

বলে রাখি, বিভিন্ন দেশের মধ্যে যে উচ্চগতির ইন্টারনেট আদান-প্রদান হয়, তার বেশিরভাগই এই সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে হয়। কেবলের সংযোগ সমুদ্রতটের যেখানে এসে থামে, সেখানেই দেশের ডেটা নেটওয়ার্ক যুক্ত হয়। আর সেই বিশেষ জায়গাটিকেই বলা হয় কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন।

জানিয়ে রাখি, বর্তমানে ভারতে মোট 17টি কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন রয়েছে। আর সেগুলি মূলত মুম্বাই, কোচি, চেন্নাই, তিরুবনন্তপুরমের মতো শহরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এগুলির পরিকাঠামোগত রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়নের কাজ করছে ডেটা কমিউনিকেশন, রিলায়েন্স জিও, এয়ারটেল, BSNL-র মতো সংস্থাগুলি।

আরও পড়ুনঃ ‘আমাদের ক্ষতি হলে ছেড়ে দেব না!’ ভারত-আমেরিকার বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে হুমকি চিনের

আগেও হয়েছিল চুক্তি

বেশ কয়েকটি রিপোর্ট মারফত খবর, 2022 সালের অক্টোবর মাসে Lightstorm Technologies নামের এক সংস্থা গুজরাট সরকারের সঙ্গে এক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল, রাজ্যের প্রথম কেবিল ল্যান্ডিং স্টেশন এবং ডেটা সেন্টার গড়ে তোলা। সে সময় কথা হয়েছিল, ইউরোপ থেকে গুজরাট পর্যন্ত সাবমেরিন কেবল সংযোগ গড়ে তোলা হবে। তবে বর্তমানে সেই প্রকল্প কতদূর গিয়ে ঠেকেছে, তা এখনো জানা যায়নি।

তবে এবার গুজরাটের IT/ITES নীতিমালার আওতায় সবুজ সংকেত মিলেছে। বলে রাখি, ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ইউটিলিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার পরিকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে এবং পাঁচ বছরের জন্য বিদ্যুৎ খরচের ভর্তুকিও যোগান দেওয়া হয়েছে। আর এইসব মিলিয়ে গুজরাট যে ভবিষ্যতে কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের হাব হয়ে উঠবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Comment