প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: কলকাতার একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের উপর নিগ্রহের ঘটনা যেন সামনে উঠে আসছে। আরজি কর হাসপাতাল থেকে শুরু করে কসবা ল’ কলেজ এবং কলকাতার IIM-ও রয়েছে সেই তালিকায়। আর এই আবহে ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলাদের কুরুচিকর মন্তব্য করার কারণে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হল এক অধ্যাপককে। ইতিমধ্যেই ভাইরাল সেই ভিডিও।
কে এই রাজদীপ মাইতি?
প্রাথমিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত এই ব্যক্তি রাজদীপ মাইতি সূর্য সেন স্ট্রিটের সিটি কলেজের গণিত বিষয়ের অধ্যাপক। বেশ কিছু দিন ধরেই নজরে আসছিল যে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলাদের নানা কুরুচিকর মন্তব্য করে অপমান করেন।
এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, দীপ্সিতা ধর এবং ঐশী ঘোষের ছবি পোস্ট করেও একাধিক আপত্তিকর মন্তব্য করতেন তিনি, এমনকি এক গবেষক অদ্রিজা রাহাকেও একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
ভাইরাল ভিডিও
আর এই আবহে এবার সেই অভিযুক্ত অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে কলেজ চত্বরে বিক্ষোভে শামিল হল SFI কর্মীরা। এমনকি পুলিশের ভরসায় না থেকে ছাত্ররাই তাঁকে কলেজের সামনে থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে সোজা তুলে দেন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায়। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
যেখানে দেখা যাচ্ছে, এসএফআই-এর কিছু সদস্য তাঁকে কলেজের সামনে থেকেই ধস্তাধস্তি করে পাকড়াও করে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, “আমরা কিছু করব না, শুধু পুলিশের কাছে নিয়ে যাচ্ছি।”
সিটি কলেজের সেই অধ্যাপক রাজদীপ মাইতিকে আজকে বুঝিয়ে দিয়েছে জনগণ। সোস্যাল মিডিয়ায় বাম মহিলা কর্মীদের খুন, ধর্ষনের হুমকি দেওয়া এর কাজ ছিল। @KolkataPolice কে জানিয়েও লাভ হয়নি। পুলিশের চটি চাটার বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ॥
মনটা গার্ডেন গার্ডেন হয়ে গেল॥ pic.twitter.com/ccDbYnKvZo
— D Ghosh (@deeghosh) July 12, 2025
উত্তেজনা ছড়ায় কলেজ চত্বরে
এদিকে এই ঘটনার পর থেকে রাজদীপ মাইতির ফেসবুক প্রোফাইল পেজ ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে আর দেখা যাচ্ছে না ওই অভিযুক্তের পেজ। জানা গিয়েছে দীর্ঘ সময় ধরেই অধ্যাপকের এই আচরণ সহ্য করে আসছিল পড়ুয়ারা। তবে ছাত্রদের সরাসরি পদক্ষেপের ফলে অবশেষে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলেই খবর। এই ঘটনা নিয়ে গতকাল থেকে গোটা কলেজ চত্বরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: নদীয়ার পর জলপাইগুড়ি! ভিন ধর্মের যুবককে বিয়ে করায় জীবিত মেয়ের শ্রাদ্ধ পরিবারের
অন্যদিকে, বাম ছাত্র সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে রাজদীপ মাইতির বিরুদ্ধে বহুবার থানায় অভিযোগ জানানো হলেও কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁর আচার আচরণ এবং ফেসবুক প্রোফাইল দেখে তাঁকে শাসকদল ঘনিষ্ঠ এবং ওয়েবকুপার সদস্য বলেই মনে করা হয়।
যদিও এই ঘটনায় অভিযুক্ত রাজদীপ মাইতির দাবি ছিল, তাঁর ফেসবুক পেজের পাসওয়ার্ড একাধিকজনের কাছে রয়েছে। তাঁর অজান্তেই নাকি এই ধরনের পোস্ট করা হচ্ছে।