বিরল খনিজ নিয়ে চিনের আধিপত্য হবে শেষ? একজোট ভারত, আমেরিকা সহ ৪ দেশ

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বর্তমান প্রযুক্তির দুনিয়ায় পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতের চাহিদা হু হু করে বাড়ছে। আর এই খাতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিটিকাল মিনারেল বা বিরল খনিজ পদার্থ (Rare Minerals)। অথচ এই খনিজের যোগান গোটা বিশ্ব জুড়ে এখনো চিনের উপরেই সিংহভাগ নির্ভরশীল।

আর এই একচেটিয়া নির্ভরতা কমানোর উদ্দেশ্যেই এবার একসঙ্গে কাঁদে কাঁধ মিলিয়ে নামলো চার দেশের শক্তিশালী জোট। হ্যাঁ, ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া এবার একসঙ্গে পথে নামছে। 1 জুলাই, 2025-এ কোয়াডের বৈদেশিক মন্ত্রীদের বৈঠকে এবার নতুন উদ্যোগ গঠিত হল কোয়াড ক্রিটিক্যাল মিনারেলস ইনিশিয়েটিভ।

কেন গুরুত্বপূর্ণ এই উদ্যোগ?

আসলে চিনের উপর নির্ভরশীলতা দিনের পর দিন বাড়ছে। বর্তমান সময়ে চিন বিশ্বের 90% রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস উৎপাদন করে। পাশাপাশি 60% লিথিয়াম এবং 62% কোবাল্ট পরিশোধন করে এবং আফ্রিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বহু খনিতে তারাই শীর্ষ বিনিয়োগকারী। 

কিন্তু চিন কেবলমাত্র উৎপাদনকারী নয়, বরং এই খনিজগুলিকে কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবেও দিনের পর দিন ব্যবহার করছে। দেখা গিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত উত্তেজনায় তারা এগুলোকেই হাতিয়ার করে তুলেছিল।

কী বলছে Quad-র পরিকল্পনা?

কোয়াড ক্রিটিক্যাল মিনারেলস ইনিশিয়েটিভের মূল লক্ষ্য হল গুরুত্বপূর্ণ খনিজের যোগান বাড়ানো, ইলেকট্রিক বর্জ্য থেকে খনিজ পুনরুদ্ধার করা ও পুনঃপ্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা করা। পাশাপাশি চিনের উপর নির্ভরতা কমিয়ে টেকসই ও নির্ভরযোগ্য সাপ্লাই চেইন গড়ে তোলা। আর এই উদ্যোগে 30 থেকে 40টি কোম্পানি ইতিমধ্যেই বৈঠকে অংশ নিয়ে বেসরকারি স্তরে সহযোগিতার রূপরেখা তৈরি করে ফেলেছে। 

এদিকে চিনের আধিপত্য ঠেকাতে ভারতও চুপ করে বসে নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি আর্জেন্টিনার এবং চিলির মতো দেশগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। শুধু তাই নয়, 2019 সালে তৈরি করা হয়েছে KABIL, যার মূল লক্ষ্য বৈদেশিক খনিজ সম্পদের নিরাপদ অ্যাক্সেস চিহ্নিত করা। পাশাপাশি 2024 সালে আর্জেন্টিনার সঙ্গে লিথিয়াম সরবরাহ চুক্তিতেও সই করেছে ভারত।

আরও পড়ুনঃ সেপ্টেম্বরেই লঞ্চ হচ্ছে iPhone 17 সিরিজ! কত হতে পারে দাম?

শুধু তাই নয়, 2023 সালে ভারত মিনারেল সিকিউরিটি পার্টনারশিপে যোগদানকারী প্রথম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের নাম পাকাপোক্ত করেছে। এমনকি জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করেছে। আর ভারত বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও ল্যাতিন আমেরিকার মতো দেশগুলোর সঙ্গে খনিজ সহযোগিতা বাড়িয়ে তুলেছে। পাশাপাশি জাম্বিয়া, মঙ্গোলিয়া, কম্বো সব জায়গাতেই চালাচ্ছে অনুসন্ধান।

Leave a Comment