১৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে মানব মল কিনছে Microsoft!

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সংরক্ষণে বিরাট পদক্ষেপ মাইক্রোসফটের (Microsoft)। শুনলে অবাক হবেন, সম্প্রতি 14 হাজার কোটি টাকার এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তারা। আর এই বিপুল টাকা খরচ করে তারা কিনছে মানব বর্জ্য। মানে ভাবতে পারছেন? আসলে এই অদ্ভুত বিনিয়োগের পেছনে রয়েছে পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনা। এই দিয়ে নাকি পৃথিবী থেকে 49 লক্ষ টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড আগামী 12 বছরে সরানো হবে! আদৌ কি তাই? চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।

কাদের সঙ্গে এই চুক্তি?

জানা যাচ্ছে, মাইক্রোসফট এই চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছে আমেরিকার সংস্থা Vaulted Deep-এর সঙ্গে। কোম্পানিটি বিশেষ এক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানব বর্জ্য, পশুর গোবর এবং খাদ্য ও কৃষিজ বর্জ্যগুলিকে তরল আকারে রূপান্তর করে এবং তা মাটির হাজার হাজার ফুট নীচে পাথরের স্তরে মজুদ করে রাখে।

তারা দাবি করছে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে পরিবেশ থেকে শুধুমাত্র কার্বন-ডাই-অক্সাইড হ্রাস পাবে না, বরং মিথেন গ্যাসের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসগুলিও বাতাস থেকে নির্গমন হবে। ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে এই প্রযুক্তি হতে পারে একেবারে সেরা হাতিয়ার।

মাইক্রোসফট কেন এই উদ্যোগ নিল?

মাইক্রোসফট মনে করছে, তাদের ডেটা সেন্টারগুলির কার্বন নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এরকমই এক প্রকল্প বিনিয়োগ করতে হবে। সংস্থাটি আগেই বলেছিল যে, 2030 সালের মধ্যে তারা সম্পূর্ণ কার্বন নেগেটিভ হতে চায়। অর্থাৎ, তারা যে পরিমান কার্বন নির্গত করছে, তার থেকে বেশি পরিমাণ কার্বন পৃথিবী থেকে সরাবে।

আর এই চুক্তির মাধ্যমে তারা প্রতি টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড সরাতেই প্রায় 30 হাজার টাকা খরচ করছে, যা যথেষ্ট ব্যয়বহুল হলেও পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু রক্ষা করতে ইতিবাচক পদক্ষেপ। পাশাপাশি এর ফলে বিশ্ব উষ্ণায়নও যে কমবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

কীভাবে কাজ করে Vaulted Deep-এর এই প্রযুক্তি?

জানা গিয়েছে, প্রথমে মানব বর্জ্য, পশুর গোবর এবং খাদ্য ও কাগজের যাবতীয় বর্জ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর সেগুলিকে বিশেষ প্রক্রিয়াজাত করে তরলে রূপান্তরিত করা হবে। তারপর সেই তরল বর্জ্য মাটির গভীরে পাথরের মধ্যে ইনজেকশন প্রযুক্তির মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর সেখানে একবার পাঠানো হলে তা স্থায়ীভাবে কার্বন ধরে রাখবে এবং বাইরে বেরিয়ে আসতে দেবে না। প্রসঙ্গত, 2008 সাল থেকেই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে Vaulted Deep। এমনকি ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বহু রাজ্যে এর অনুমোদনও পেয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ভিনরাজ্য দূর, এ রাজ্যেই শাসানির শিকার বাঙালি! তৃণমূল বিধায়কের ভিডিও পোস্ট শুভেন্দুর

উল্লেখ্য, পরিবেশ সুরক্ষায় এখন বড় বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলি এগিয়ে আসছে। মাইক্রোসফট ছাড়াও গুগল, অ্যামাজনের মতো সংস্থাগুলিও সবুজ শক্তি ও পরিবেশবান্ধব খাতে নিজেদের আধিপত্য দেখাচ্ছে এবং ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। আর বিশ্বের সেরা টেক কোম্পানিগুলির এই দায়িত্বশীল পদক্ষেপ, পৃথিবীকে রক্ষা করতে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Comment