সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সকাল হতেই যেখানে রান্নাঘর থেকে রান্না করার শব্দ, ঘরের আনাচে-কানাচে ঠুকঠাক শব্দ, ঘর মোছার আওয়াজ ভেসে আসত, সেখানে এখন শুধুই নিস্তব্ধতা। হ্যাঁ, গুরগাঁওয়ের (Gurgaon) অভিজাত আবাসন এলাকা আরডি সিটিতে হঠাৎ করেই যেন নীরবতা নেমে এসেছে। কারণ একটাই, সমস্ত গৃহকর্মী একসঙ্গে কোথাও উধাও হয়ে গিয়েছে।
হঠাৎ উধাও সব কাজের লোক
বর্তমানে গুরগাঁওয়ের এই এলাকায় রান্নার কাজ থেকে শুরু করে ঘর ঝাঁট দেওয়া, মোছা, বাচ্চা সামলানো, বর্জ্য পরিষ্কার, সবই এখন ঘরের গৃহস্বামীরা সামলাচ্ছে। কাজের লোক যে ঘরের অদৃশ্য চালিকাশক্তি, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে গুরগাঁওয়ের বাসিন্দারা। হ্যাঁ, এই অদ্ভুত পরিস্থিতির কথা প্রকাশ্যে এনেছে Reddit-এর একটি পোস্ট।
সেখানে এক স্থানীয় বাসিন্দা লেখেন, আরডি সিটি’র ভয়াবহ অবস্থা। সব কাজের মাসিরা নিখোঁজ। ফোন সুইচড অফ। ঝাড়ুদাররাও আসছে না। কী হচ্ছে আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না। আর এই পোষ্টের পরই শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। জানা যায় যে, শুধু আরডি সিটি নয়, বরং গুরগাঁও শহরে একসঙ্গেই সব গৃহকর্মীরা কাজ বন্ধ করে কোথাও চলে গিয়েছে!
নেপথ্যে কারণ কী?
News 18-এর রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এই নিখোঁজের ঘটনার পেছনে এক বিরাট পুলিশি অভিযান রয়েছে। গুরগাঁও পুলিশ এবং ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট সম্প্রতি একাধিক এলাকায় হানা দিয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ ও মায়ানমার থেকে আগত গৃহকর্মীরা বাস করতেন বলে অভিযোগ। সূত্র বলছে, অনেক গৃহকর্মী ভারতের বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই এইসব এলাকায় বসবাস করছিলেন। আর সেখান থেকেই কড়া নজরদারি ও গ্রেফতার শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সবথেকে বিশ্বস্ত ও সেরা নেতার তালিকায় ১ নম্বরে নরেন্দ্র মোদী, বহু পিছিয়ে ট্রাম্প
Reddit-এর এক ব্যবহারকারী বলেছেন, আমার কাজের দিদি জানালেন পাশের পাড়ার কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মানেসার ডিটেনশন সেন্টারে। উনি ভয় পেয়েছেন, তাই গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। সূত্র বলছে, প্রায় 200 জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, যারা নিজেদের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা বলে দাবি করলেও বৈধ নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।
এমনকি এর মধ্যে 11 জন বাংলাদেশি নাগরিকের পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। আর তাদের ডিপোর্ট করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আর এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র বাড়ির কাজ বন্ধ নয়, বরং গুরগাঁওয়ের বাসিন্দাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। এখন দেখার পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।