কেউ নেই! ছেঁড়া ফুটবলই একমাত্র বন্ধু আনোয়ারের

Anwar’s friendship with football

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: জড় বস্তুর সাথে কি বন্ধুত্ব হয়? উত্তর খুঁজতে গেলে উঠে আসবে নানান তথ্য। কেউ ভালবেসে নিজের বাহন অর্থাৎ মোটরসাইকেলটিকেই বন্ধু বানিয়ে নিয়েছেন! কেউ কেউ আবার মানব বন্ধুত্ব ভুলে নিজের একটি হাত ঘড়িকেই সর্বদা নিজের সঙ্গে সঙ্গে রাখেন!

এরাও তো প্রতিদিনের চলার সঙ্গী! তাহলে কি এদের বন্ধু বলা যায় না? আলবাত যায়। প্রশ্ন করলে হয়তো এমন উত্তরই দিতেন নদিয়ার আনোয়ার বাবু। কারণ তিনিও তো ফুটবলের প্রতি আসক্ত। ফুটবলই যে তাঁর অন্যতম প্রিয় বন্ধু, সে কথা মুখে নয় বরং নিজের কাজ দিয়েই বুঝিয়েছেন বছর 42 এর আনোয়ার মন্ডল। রবিবার অর্থাৎ বন্ধুত্ব দিবসের দিনই জড় বস্তুর সাথে মানুষের সম্পর্কটা যে কতটা নিবিড়, চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখিয়েছিলেন নদিয়ার আনোয়ার।

ছেঁড়া ফুটবলের সাথে বন্ধুত্ব আনোয়ারের

সদ্য সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কলকাতার কোনও এক রাস্তার পাশে ঘাসের উপর দাঁড়িয়ে বন্ধুর সাথে খুনসুঁটিতে ব্যস্ত এক মধ্যবয়স্ক। ভিডিওটি যিনি করেছেন তাঁর বক্তব্য, ওই মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির নাম আনোয়ার মন্ডল। বয়স, এখনও 42 পেরোয়নি। ভাইরাল পোস্ট থেকে জানা গেল নদিয়ার বাসিন্দা তিনি।

রবিবার বন্ধুত্ব দিবসের দিন তাঁকেই এক অদ্ভুত বন্ধুত্বের দৃষ্টান্ত তৈরি করতে দেখে তা ক্যামেরাবন্দি করেন তমাল সাহা নামক এক ব্যক্তি। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, খালি গা এবং একটি হলদে হাফ প্যান্ট পরিহিত ভদ্রলোক তথা আনোয়ার মন্ডল, দুই পায়ে একটি পুরনো ফুটবল ( বন্ধু) নিয়ে জাগলিং করছেন।

ভিডিওটিতে, তাঁকে জাগলিং করার সময় এক ফোটাও বিচলিত হতে দেখা যায়নি। তমাল বাবুর দাবি, ওই ফুটবলের প্রতি আনোয়ারের ঝোঁক এতটাই যে এক লপ্তে একশো, দুইশো নয় বরং 2178টি জাগলিং করেছিলেন তিনি। হ্যাঁ, ভিডিওটিতেও সেই দৃশ্য খুব স্পষ্ট। আসলে, একটা ছেঁড়া ফাটা ফুটবলের সাথেও যে বন্ধুত্ব করা যায়, সে কথা বোধহয় নিজের দৃঢ় মনোভাব এবং একাগ্রতা দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নদিয়ার আনোয়ার। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নিজের পথ খুঁজে নিয়েছে।

 

 

এই রবিবারে এক ছোট্ট বন্ধুত্বের গল্প !

এই বন্ধুত্ব দিবসে আমি তোমাদের এক অনন্য বন্ধুত্বের গল্প বলতে চাই। একজন বাঙালির গল্প – নাম আনোয়ার মন্ডল, বয়স ৪২, বাড়ি নদিয়ায়।

এক নিরিবিলি রবিবার, কলকাতার রাস্তায় হঠাৎই ওঁনাকে দেখি – একটু দূরে দাঁড়িয়ে ফুটবল জাগলিং করছেন। ঘামছেন ভীষণ, কিন্তু তবুও থামছেন না। আমি কাছে গিয়ে দাঁড়ালেও, ওঁনার ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা এতটাই গভীর ছিল যে, তিনি একটুও বিচলিত হলেন না। ২১৭৮টা জাগলিং শেষ করে তবে কথা বললেন আমার সঙ্গে।

তিনি একা থাকেন, কয়েক বছর আগে মা-বাবাকে হারিয়েছেন। জীবনে তেমন কেউ নেই, কিন্তু তাঁর প্রিয় বন্ধুটি আজও তাঁর সঙ্গ ছাড়েনি- একটা ছেঁড়া ফাটা ফুটবল। এই ফুটবলই যেন হয়ে উঠেছে তাঁর জীবনের সাহচর্য, আত্মবিশ্বাস আর আত্মপ্রেমের পাঠশালা। একাকীত্বের মাঝে হয়তো হারিয়ে যেতে পারতেন, সেখান থেকেই নিজেকে ফিরে পেয়েছেন এই বলের মধ্যে দিয়ে।

আমি মাথা নিচু করে শ্রদ্ধা জানাই ওঁনার এই নিষ্ঠা আর ভালোবাসাকে। ঘামঝরা প্রতিটা মুহূর্ত যেন বলে যায় – হার মানা চলবে না বন্ধু। আনোয়ারবাবুর এখনও স্বপ্ন আছে – একদিন তিনি ভারতের হয়ে খেলবেন, আবার বিয়ে করবেন।

এই শহরের এক কোণে দাঁড়িয়ে এমনই এক বন্ধুত্বের গল্পে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম আমার পুরোনো বন্ধু কলকাতাকে – এই শহর আমায় কোনোদিন এক ছেড়ে দেয়নি, শিখিয়েছে কত আনোয়ারবাবুর মানুষদের গল্পের মধ্যে দিয়ে – বন্ধুত্ব মানে শুধু মানুষ নয়, কখনো কখনো একটা ফুটবলও হতে পারে জীবনের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।

এই গল্প শুধু আনোয়ারের নয়, আমাদের সবার। নিজেকে ভালোবাসতে শেখো, নিজের মধ্যে খুঁজে নাও তোমার সবচেয়ে আপন বন্ধুকে।

This Friendship Day, I want to share with you a truly unique story of companionship. The story of a Bengali man – Anwar Mondal, 42 years old, from Nadia.

It was a quiet Sunday when I spotted him on a Kolkata street, juggling a football all by himself. He was drenched in sweat, yet unwavering. Even as I approached him, he didn’t flinch; his love for football ran deep. Only after finishing 2,178 juggles did he finally speak to me.

Anwar lives alone. He lost his parents a few years ago. There is hardly anyone in his life now, except for one faithful friend: a torn, old football. That ball has become his closest companion, his source of confidence, and his teacher of self-love. In moments when he could’ve been lost to loneliness, he found himself again – through football.

I bow my head in respect to his passion and dedication. Every drop of his sweat spoke of a quiet resolve: don’t give up dear friend.

Anwar still dreams – of one day playing for India, of getting married, of building a life beyond the margins.

On a random street in this bustling city, I found a story of friendship that moved me deeply. A friendship that reminds us – companions aren’t always human. Sometimes, a worn out football becomes your truest source of strength. This isn’t just Anwar’s story.

It belongs to all of us. Learn to love yourself. Somewhere within, you’ll find the best friend you have always needed.

#FriendshipDay #HappyFriendshipDay #football #friendship

Posted by Tamal Saha on Sunday, August 3, 2025

অবশ্যই পড়ুন: হঠাৎ বিকট শব্দ! মাওবাদীদের বনধের দিনই জঙ্গলমহলে থামল দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস

উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, নদিয়ার বাসিন্দা আনোয়ার বাবুর জীবনে আপাতত তেমন কেউ নেই। বন্ধু বলতে ওই একখানা ছেঁড়া ফুটবল। তাঁকে নিয়েই জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই কাটিয়ে দিচ্ছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে আনোয়ার বাবুর দাবি, জীবনে কেউ না থাকলেও ওই ফুটবলটি আজ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গ ছাড়েনি। ওই এক ফুটবলই যেন হয়ে উঠেছে তাঁর জীবনের অন্যতম আত্মবিশ্বাস, আত্মপ্রেমের পাঠশালা। যদিও বলের মধ্যে দিয়ে নিজের একাকীত্ব দূর করার চেষ্টা করলেও আনোয়ার বাবু খেলাধুলার হাত ধরেই আগামী দিনে উপার্জনের পথ বের করতে চান।

Leave a Comment