প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ভারী বৃষ্টি এবং জলের চাপে এবার ভয়াবহ পরিণতি হতে চলেছে ফরাক্কা ব্যারেজে! যার জেরে এবার প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে মুর্শিদাবাদে। এদিকে মধ্য প্রবাহে বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টির জেরে হুহু করে বাড়ছে গঙ্গার জলস্তর। আর তাতেই গতকাল ফরাক্কা ব্যারাজ এলাকায় গঙ্গার বিপদসীমা ছাড়িয়ে গেল। এমতাবস্থায় বন্যার জন্য সতর্কতা জারি করা হল বাংলাদেশকেও।
আরও বাড়বে জলস্তর
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ সোমবার, সকালে মুর্শিদাবাদে ফরাক্কা বাঁধ এলাকায় গঙ্গার আপ স্ট্রিমে জলস্তর পৌঁছে গিয়েছে ২৭.১০ মিটারে। অন্যদিকে, ডাউন স্ট্রিমেও একই অবস্থা। সেখানে গঙ্গার জলস্তর ২৪.০১ মিটার উচ্চতায় পৌঁছেছে। যেখানে ফরাক্কা ব্যারাজ এলাকায় গঙ্গার বিপদসীমা ২২.২৫ মিটার। এই অবস্থায় ফরাক্কা ব্যারাজের বেশির ভাগ গেট থেকে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় জল ছাড়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে। এদিকে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা বার্তা দিয়েছে যে জলস্তর নাকি আরও বাড়বে। কারণ মুর্শিদাবাদের সুতি, সামশেরগঞ্জ হয়ে পদ্মার যে শাখা বাংলাদেশের প্রবেশ করেছে, সেখানেও জলস্তর বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বন্যার আশঙ্কা বাংলাদেশেও
ব্যারেজে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যেই লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে রঘুনাথগঞ্জের ২ নম্বর ব্লকে। ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে ফরাক্কা বাঁধে যে পরিমাণ জল এই মুহূর্তে ধরা আছে, অতিরিক্ত জলপ্রবাহ বাড়তে থাকলে জল ছাড়তে বাধ্য হবেন কর্তৃপক্ষ। রীতিমত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে বাংলাদেশ সহ একাধিক জেলায়। তাই সেই জন্য এই নিয়ে বিষয়টি বাংলাদেশের জলসম্পদ মন্ত্রককে সেই বিষয়ে আগাম বার্তা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ফরাক্কার ব্লকের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করলেন জঙ্গিপুর মহকুমা শাসক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৌম্যজিৎ বড়ুয়া, ফারাক্কা ব্লকের বিডিও জুনায়েদ আহমেদ ও ফরাক্কা থানার আইসি নীলোৎপল মিশ্র সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: একই রয়েছে নাম, এপিক নম্বর! ছবিতে অন্যজন, প্রশাসনের দ্বারস্থ বনগাঁর ভোটার
উল্লেখ্য বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষেরা। গত রবিবার রাত থেকে গ্রামে গঙ্গার জল ঢোকায় আতঙ্কে রয়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। যদিও গত কয়েক দিন থেকেই সামশেরগঞ্জে বেড়েই চলেছে গঙ্গার জলস্তর, এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। এবার নদী পাড় ছাপিয়ে সেই জল ঢুকছে উত্তর চাচন্ড এলাকায়। এমতাবস্তায় গ্রামবাসীদের সুরক্ষার কথা ভেবে তাদের অন্যত্র পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে এবং শুকনো খাবারের বিপুল আয়োজন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় বাচ্চাদের জন্য বেবি ফুডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।