সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের পর এবার ব্যাঙ্ক অফ বরোদা (Bank of Baroda)! হ্যাঁ, সাধারণ গ্রাহকদের মুখে হাসি ফোটাতে বিরাট ঘোষণা করল এই ব্যাঙ্ক। জুলাই মাসের শুরু থেকেই এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ঘোষণা করেছে যে, তাদের সেভিংস অ্যাকাউন্টে আর মিনিমাম ব্যালেন্স না রাখার জন্য কোনোরকম চার্জ কাটা হবে না।
আর এই বড়সড় পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা নাম লেখালো পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এবং ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের মতো অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তালিকায়, যারা ইতিমধ্যে গ্রাহকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এই চার্জ মুকুব করেছে।
প্রথমবার পথ দেখিয়েছিল SBI
2020 সালের স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এই নিয়ম বাতিল করে অন্যান্য ব্যাঙ্কের পথ দেখিয়েছিল। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এসবিআই’র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, অনেকেই প্রথমবার অ্যাকাউন্ট খুলতে আগ্রহী হয়। তবে আমরা যদি মিনিমাম ব্যালেন্সের চাপ না দিই, তাও 95% অ্যাকাউন্টে কিছু না কিছু টাকা জমা থাকে। তাই গ্রাহকদের স্বার্থে আমরা কোনোরকম চার্জ কাটি না।
কেন আনা হল এই পরিবর্তন?
আসলে এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে আর্থিক খতিয়ান। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, সঞ্চয় এবং চলতি অ্যাকাউন্টের জমার হার কমে 36.8%-এ দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছর ছিল 39.2%। পাশাপাশি টার্ম ডিপোজিট এবং সার্টিফিকেট অফ ডিপোজিটের উপর নির্ভরতা বাড়ছে।
এক কথায় ব্যাঙ্কগুলিকে এখন উচ্চ হারে তহবিল সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে পড়ে মিনিমাম ব্যালেন্স সংক্রান্ত জরিমানা তুলে নেওয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র সার্ভিস চার্জ নয়, বরং গ্রাহকদের প্রতি ব্যাঙ্কের দায়বদ্ধতার প্রতীক হিসেবেও দেখছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ।
জানিয়ে রাখি, প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার আওতায় এখনো পর্যন্ত দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় 50 কোটির বেশি নতুন অ্যাকাউন্ট যুক্ত হয়েছে। আর প্রথমদিকে অনেক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স না থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড় ব্যালেন্স বেড়ে 18%-এ দাঁড়িয়েছে। তাই ব্যাঙ্কগুলি মনে করছে, ছোট গ্রাহকদের পাশে দাঁড়ালে তারা ধীরে ধীরে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুনঃ অবসরের পরবর্তী জীবন নিশ্চিত করবে EPF ও NPS, পাবেন ১২ কোটি টাকা
ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং-এও কমেছে খরচ
আগে যেখানে গ্রাহকদের পরিষেবা খরচ তুলতে গিয়ে ব্যাঙ্কগুলি সেভিংস অ্যাকাউন্টের সুদের হার কমিয়ে দিত এবং চার্জের উপর নির্ভর করত, সেখানে এখন ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং-এর সুবাদে সেই খরচ অনেকটাই কমেছে। ফলে ব্যাঙ্কগুলি এখন ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে আয় করছে এবং ধাপে ধাপে মিনিমাম ব্যালেন্স না রাখার জরিমানা তুলে নিচ্ছে।